আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ২৮ সেপ্টেম্বর

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক ভিসি হাসিবুর রশীদসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে সপ্তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ দিন ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের বাকি সদস্যরা হলেন- অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

এদিন ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজের শুরুতেই ছয় নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়া সিয়াম আহসান আয়ানকে জেরা করেন স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। পরে সাত নম্বর সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়।

ট্রাইব্যুনালে আজ প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মঈনুল করিম ও আবদুস সোবহান তরফদার।
এর আগে, ২১ সেপ্টেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্য দেন আয়ান। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তিনিই আবু সাঈদকে হাসপাতালে নিতে সর্বপ্রথম এগিয়ে আসেন। নিজের সাক্ষ্যতেও পুরো বর্ণনা তুলে ধরেছেন তিনি।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর পঞ্চম দিনের মতো জেরা শেষ হয়। ওই দিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার লাইব্রেরিয়ান আনিসুর রহমানকে জেরা করেন স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। ৯ সেপ্টেম্বর চতুর্থ দিনে পাঁচ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন আনিসুর রহমান। একই দিন এসআই মো. তরিকুল ইসলামও জবানবন্দি দিয়েছেন। ওই দিন তরিকুলের জেরা শেষ করলেও আনিসুরের হয়নি।

৮ সেপ্টেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্য দেওয়া রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজিবুল ইসলামের জেরা শেষ করেন স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। ৭ সেপ্টেম্বর তিনি জবানবন্দি দেন। ওই দিন দ্বিতীয় সাক্ষী রংপুরে কর্মরত এনটিভির সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট একেএম মঈনুল হককেও জেরা করা হয়।

গত ২৮ আগস্ট জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনের জবানবন্দির মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ। একই দিন সাংবাদিক মঈনুল হক সাক্ষ্য দিলে জেরা হয়নি।

এদিকে, আজ সকালেও এ মামলার ছয় আসামিকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। তারা হলেন- এএসআই আমির হোসেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ।

গত ২৭ আগস্ট সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। গত ৬ আগস্ট ৩০ আসামির বিরুদ্ধে ফর্মাল চার্জ (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। তবে এ মামলায় বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ জন এখনও পলাতক রয়েছেন। তাদের পক্ষে গত ২২ জুলাই সরকারি খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।

গত ৩০ জুলাই পলাতক আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত চার আইনজীবী। এর মধ্যে পাঁচজনের হয়ে লড়েন আইনজীবী সুজাত মিয়া। নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মামুনুর রশীদ। এছাড়া শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত জাহান ও শহিদুল ইসলাম। ২৯ জুলাই তিন আসামির পক্ষে শুনানি হয়। এর মধ্যে শরিফুলের হয়ে লড়েন আইনজীবী আমিনুল গণি টিটো। কনস্টেবল সুজনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু ও ইমরানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সালাহউদ্দিন রিগ্যান।

২৮ জুলাই এ মামলার ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ করে প্রসিকিউশন। ৩০ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। আর ২৪ জুন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। এ মামলায় মোট সাক্ষী ৬২ জন।

এমকে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মা হারালেন দক্ষিণী সুপারস্টার মোহনলাল Dec 31, 2025
img
৪ গোল খেয়ে মেজাজ হারালেন মার্তিনেজ Dec 31, 2025
img
খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ দিনের শোক কর্মসূচি Dec 31, 2025
img
গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ জুলাই যোদ্ধা শফিকের জানাজা সম্পন্ন Dec 31, 2025
img
মোদির ব্যক্তিগত চিঠি তারেক রহমানের কাছে পৌঁছে দিয়েছি : জয়শঙ্কর Dec 31, 2025
img
সারজিস আলমের ৩৩ লাখ টাকার সম্পদ, বাড়ি-গাড়ি নেই Dec 31, 2025
img
পুরো ঢাকাই পরিণত হয় খালেদা জিয়ার জানাজার মাঠে Dec 31, 2025
img
শীর্ষস্থানে আর্সেনাল, ইউনাইটেডের হোঁচট Dec 31, 2025
img
সিলেট স্টেডিয়ামে খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত Dec 31, 2025
img
দৃষ্টিসীমা পেরিয়ে শুধু জনস্রোত, সবার চোখেই জল Dec 31, 2025
img
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করল আফগানিস্তান Dec 31, 2025
img
খালেদা জিয়ার কফিন কাঁধে তুলে নিলেন আজহারী Dec 31, 2025
img
জেলে যাওয়ার আগে বেবী নাজনীনকে কী বলেছিলেন বেগম জিয়া? Dec 31, 2025
img
দিল্লিতে বসেই ভারতের এক প্রধানমন্ত্রীর মুখের ওপর জবাব দিয়েছিলেন বেগম জিয়া! Dec 31, 2025
img
সোশ্যাল মিডিয়ায় এআই কাণ্ডে বিপাকে ভারতী সিং Dec 31, 2025
img
এফডিসিকে নিস্তেজ মনে হয়, দেখতে ভালো লাগে না: ডলি জহুর Dec 31, 2025
img
পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক, নেই কোনো বাড়তি চাপ Dec 31, 2025
img
হাসনাত আব্দুল্লাহর বাড়ি-গাড়ি কিছুই নেই, সম্পদ রয়েছে ৫০ লাখ টাকার Dec 31, 2025
img
খালেদা জিয়া বলতেন বিদেশে বন্ধু আছে, প্রভু নেই: নজরুল ইসলাম খান Dec 31, 2025
img
বিপিএলে ভেন্যু কমছে! Dec 31, 2025