এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠার প্রথম সুযোগে ভারতের বিপক্ষে পেরে ওঠেনি বাংলাদেশ। ফলে পাকিস্তানের সঙ্গে সুপার ফোরে নিজেদের শেষ ম্যাচটি হয়ে উঠেছে অলিখিত সেমিফাইনাল। ফাইনালে উঠতে উভয়ের সামনেই সহজ সমীকরণ, যারা জিতবে ভারতের বিপক্ষে তারাই মহারণী ম্যাচ খেলবে। আজ (বুধবার) বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে দুই দল।
এশিয়া কাপের গ্রুপপর্ব পেরোনোর সময়ও হয়তো বাংলাদেশের ফাইনাল খেলা নিয়ে আশাবাদী মানুষের সংখ্যা কম ছিল। সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েই সেই আশার বেলুন ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। ওই ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিং নৈপুণ্য আশা দেখাচ্ছে পাকিস্তানের বিপক্ষে সুপার ফোরের শেষ ম্যাচেও। আর টাইগারদের বোলিং বিভাগ কম-বেশি প্রত্যাশা পূরণ করে আসছে আগে থেকেই।
বাংলাদেশের জন্য আরেকটি বাড়তি পাওয়া পাকিস্তানের অধারাবাহিক ব্যাটিং। গ্রুপপবের্বে ভারত ছাড়া তাদের তেমন কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়নি। ধারাবাহিকভাবে তারা সুপার ফোরেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে হেরেছে। এরপর শ্রীলঙ্কার মাত্র ১৩৪ রান তাড়া করতে নেমে ১২ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারায় পাকিস্তান। শেষদিকে হুসাইন তালাত ও মোহাম্মদ নওয়াজের জুটি কোনোমতে তাদের বিপদ থেকে টেনে তুলেছে। পুরো টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের দৈন্যদশাকে নিজেদের পক্ষে কাজে লাগাতে চাইবে বাংলাদেশের বোলাররা।
বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপের প্রশংসা প্রতিপক্ষের মুখে এর আগেও শোনা গেছে। গতকালও (বুধবার) পাওয়ার প্লেতে ১২ গড়ে ৭২ রান এবং ১০.১ ওভারে দলীয় একশ পূর্ণ করা ভারতের বিপক্ষে পরের অর্ধাংশে ঘুরে দাঁড়ান মুস্তাফিজ-রিশাদরা। ফলে দুইশ’র পথে থাকা সূর্যকুমার যাদবের দল করে শেষমেষ ১৬৮ রান। সেই লক্ষ্য তাড়ায় সাইফ হাসান ছাড়া বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটারই উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেননি। ফলে বাংলাদেশের জন্য আশার সঙ্গে হতাশার জায়গাও অধারাবাহিক ব্যাটিং।
সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অবশ্য আশা জোগাচ্ছে টাইগারদের। বাংলাদেশের মাটিতে সর্বশেষ জুলাইতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হেরেছিল পাকিস্তান। এ ছাড়া শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডস মিলিয়ে টানা তিনটি সিরিজ জিতে লিটন দাসের দল এশিয়া কাপ খেলতে গেছে। যদিও পাকিস্তানের সঙ্গে সবমিলিয়ে টি-টোয়েন্টি পরিসংখ্যানটা আহামরি আশা জাগানিয়া নয়। সবমিলিয়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ২৫ বার টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে পাকিস্তান ২০ ও বাংলাদেশ জিতেছে ৫টিতে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে পরিকল্পনা নিয়ে গত ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়া জাকের আলি অনিক বলেন, ‘আগেও বলেছি আমরা চ্যাম্পিয়ন হতেই আসছি। কালকের (পাকিস্তান) ম্যাচেও সেই সাহস নিয়েই খেলব, আমরা ফাইনালে ওঠা এবং চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই খেলব ইনশাআল্লাহ। পরিকল্পনা এরকমই থাকবে। বোলিংয়ে ভালো করেছি। ব্যাটিংটাও এই টুর্নামেন্টেই আমরা ভালো করেছি। ম্যাচ জিততে হলে অবশ্যই ব্যাটিং ভালো করতে হবে। আশা ছাড়ার কিছু নেই।’
অন্যদিকে, পাকিস্তানের তারকা পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির মতে বাংলাদেশকে হারাতে হলে পাকিস্তানকে নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়েই খেলতে হবে। বাঁ-হাতি এই পেসার বলেন, ‘বাংলাদেশ ভালো দল। ক’দিন ধরে খুব ভালো খেলছে। ভালো দলের সঙ্গে খেললে প্রথম ধাক্কাটা দিতে হবে আপনাকেই। সুযোগ দেওয়া যাবে না। আমাদের ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং- তিন বিভাগেই ভালো খেলতে হবে।’
এমকে/এসএন