অবিলম্বে জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ ৫ দফা দাবিতে ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের উদ্যোগে দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে দলটি।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শাখায় ব্যাপক জনসমাগমে এ কর্মসূচি পালিত হয়। বিক্ষোভপূর্ব সমাবেশে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন ছাড়া এ দেশের জনতা ঘরে ফিরে যাবে না। জনগণের ন্যায্য দাবি অগ্রাহ্য করে ক্ষমতায় আসার সব কূটকৌশল ব্যর্থ হবে। জনগণের প্রাণের দাবিকে উপেক্ষা করার পরিণাম ভয়াবহ হবে। জুলাই সনদের বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে দেশে যেকোনও অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হলে এর দায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেই বহন করতে হবে।’
তাদের অভিযোগ, দেশে অবাধ রাজনৈতিক কার্যক্রমকে স্তব্ধ করার জন্য পেশিশক্তি চোখ রাঙাচ্ছে, ফ্যাসিবাদের সহযোগীরা উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের আনুকূল্য পেতে দায়িত্বশীল পর্যায় থেকেও জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষার বিপরীতে কথা বলা হচ্ছে। এভাবে দেশকে ভয়াবহ অন্ধকার গহ্বরে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
বক্তারা বলেন, ‘আপনার দল বা সংগঠন যত বড়ই হোক, জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে টিকতে পারবে না। ভারতীয় আশীর্বাদ নিয়ে রাজনীতি এ দেশের জনগণ কখনোই মেনে নেবে না— রাজাকার, মৌলবাদী এসব ট্যাগ অবিলম্বে বন্ধ করুন- হাসিনার পরিণতি থেকে অন্তত শিক্ষা নিন। অন্যথায় হাসিনার প্রতিবেশী হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন। আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক ঐক্য সুদৃঢ় রাখতে চাই। কোনও দলের চাণক্যনীতির কারণে যদি সেই ঐক্য ভেঙে যায়, তবে তার দায়ভার সেই দলকেই বহন করতে হবে।’
তারা আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমেই জনগণের ন্যায্য দাবি উত্থাপন করে আসছে। জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ ৫ দফা দাবি আজ জনগণের প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। সংস্কার, ফ্যাসিস্টদের বিচার, জনগণের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা—এসব দাবিকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। এখন সময় এসেছে এই দাবিগুলো বাস্তবায়নের। অন্যথায় এ দেশের কোটি জনতা রাজপথে অনড় থাকবে।’
মিছিলে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মী ও জনসাধারণ সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘সময় থাকতে সরকারকে জনগণের দাবির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। অন্যথায় জনতার আন্দোলনের স্রোত সর্বগ্রাসী অপশক্তিকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। জুলাই সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন ও ৫ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছেড়ে দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই।’
আজকের কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানী ঢাকার ভাটারা থানা, গাজীপুর জেলা, গাজীপুর মহানগর, দোহারে ঢাকা জেলা দক্ষিণ শাখা, সাভারে ঢাকা জেলা উত্তর শাখা, মানিকগঞ্জ, চাঁদপুর, কক্সবাজার, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহসিনুল হাসানের নেতৃত্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গোপালগঞ্জ, কুষ্টিয়া, নড়াইল, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, জামালপুর, চুয়াডাঙ্গা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, দিনাজপুর, নাটোর, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, গাইবান্ধাসহ প্রায় সব জেলায় এবং বিশ্বনাথ উপজেলা, ভৈরব, করিমগঞ্জ, নান্দাইল, কালিগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ, কাশিমপুর, মীরসরাই, নড়িয়া, বিজয়নগর, বড়লেখা, শিবচর, মাধবদী, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরীর নেতৃত্বে জগন্নাথপুর, বাঞ্ছারামপুর, পলাশবাড়ী, ৭নং ওয়ার্ড সিলেট মহানগর, বদরগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর, গোলাপগঞ্জ, জাজিরা, বিয়ানীবাজারসহ শতাধিক উপজেলায় এ কর্মসূচি পালিত হয়।
ইউটি/টিএ