জামায়াতের বক্তব্য ভারতের রাজনীতিকে সুবিধা দিতে পারে : জাহেদ উর রহমান

রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান বলেছেন, ‘জামায়াতের নায়েবে আমির আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের একটি সাম্প্রতিক বক্তব্য জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। মোহাম্মদ তাহের ওই বক্তব্যে বলেছিলেন, যদি ভারত বাংলাদেশে আক্রমণ করে বা এমন সম্ভাবনার কথা কেউ বলে তাহলে ক্ষমতায় এলে জামায়াত তার জবাব দেবে।’

সম্প্রতি জাহেদ উর রহমান নিজের ইউটিউব চ্যানেল জাহেদস টেইক-এ এসে এ প্রসঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘জামায়াতের নায়েবে আমিরের বক্তব্যে এক ধরনের জিহাদী জোশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

যা সম্ভবত তার আগের অন্য এক বক্তব্যের কারণে তীব্রতর হয়েছে। নিউইয়র্কে এক সংবর্ধনায় মোহাম্মদ তাহের মন্তব্য করেন, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে কোনো কম্প্রোমাইজ করা হবে না; তাকে অনেকে ভারতের ভয় দেখালে তিনি বলেন, ‘আমি দোয়া করি তারা ঢুকুক’। কারণ ঢুকলে ১৯৭১ সালের মিথ্যা অভিযোগগুলো উপেক্ষিত হবে এবং তারা ‘প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। তিনি দাবি করেন কমপক্ষে ৫০ লাখ যুবক ভারতের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রাম করবে, তাদের মধ্যে অনেকে গেরিলা যুদ্ধে যাবে এবং পুরো অঞ্চলে ‘স্বাধীনতা যুদ্ধ’ শুরু হবে।

জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘মোহাম্মদ তাহেরের এই ভাষ্য ভারতকে আশ্বস্ত করার প্রয়াস হিসেবেও দেখা যেতে পারে। তারা ভারতকে বোঝাতে চাইছে যে জামায়াত কোনো আক্রমণাত্বক অবস্থান নেবে না, আবার একই সঙ্গে জিহাদি রঙ দেখানো হচ্ছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে কিছু আন্তর্জাতিক সাক্ষাৎকার ও প্রতিবেদনেও জামায়াত ও তার নেতাদের দাবির নানা ব্যাখ্যা ফুটে উঠেছে। যেমন কেউ বলছেন ভারতের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক তৈরি করতে আগ্রহী, কেউ বলছেন দেশে তারা শরিয়া আইন চাইবে।

এইসব জটিলতা স্পষ্টকরণ দাবি করে জাহেদ বলেন, আগামী নির্বাচনের আগেই এ বিষয়ে স্পষ্টতা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ‘জামায়াতের এই ধরনের উপস্থাপনা যদি অব্যাহত থাকে, তা রাজনৈতিকভাবে বিজেপি ও ভারতের জন্য সুবিধাজনক হয়ে উঠতে পারে। কারণ ভারতীয় রাজনীতি এইসব বক্তব্যকে দেশীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে গুরুত্ব দিয়ে ব্যবহার করতে পারে।’
তিনি আরো বলেন, ‘জামায়াতের বক্তব্য, আচরণ ও পরিকল্পনা নিয়ে পারদর্শিতা ও স্বচ্ছতা জরুরি। না হয় রাজনৈতিক পরিসরে বিভ্রান্তি ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত টেভাল সৃষ্টি হতে পারে।

এই ধরনের ভাষ্য ও রাজনৈতিক কৌশল দেশীয় রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে এবং তাই এর যথার্থ ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ প্রয়োজন।’

কেএন/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ইসরায়েলিদের হামলায় শিশুসহ প্রাণ হারাল ৬ ফিলিস্তিনি Nov 21, 2025
img
২১ নভেম্বর: কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে Nov 21, 2025
img
যশোরে ৪ লাখ টাকার জাল নোটসহ গ্রেপ্তার ১ Nov 21, 2025
img
বাংলাদেশের ম্যাচসহ টিভিতে আজকের খেলার সূচি Nov 21, 2025
img
খেজুর খাওয়ার সঠিক সময়, খালি পেটে নাকি ঘুমানোর আগে? Nov 21, 2025
img
তালাক দিলেন স্ত্রী, ২০ লিটার দুধ দিয়ে স্বামীর গোসল Nov 21, 2025
img
ফুসফুসের বন্ধু আদা-চা Nov 21, 2025
img
শনিবার হেলিকপ্টারযোগে চট্টগ্রামে যাচ্ছেন জামায়াত আমির Nov 21, 2025
img
দিতিপ্রিয়া ও জিতুর দ্বন্দ্ব চরমে, শ্যুটিং চলছে নায়ক ছাড়া Nov 21, 2025
img
সিলেটে র‍্যাবের অভিযান, বাঁশঝাড়ে মিলল ১২ বোর শটগান Nov 21, 2025
img
ভোটের সময় বাড়ানোয় ফের বিতর্কে মিস ইউনিভার্স Nov 21, 2025
img
ভক্তদের অনুরোধে মেয়েকে প্রকাশ্যে আনলেন অহনা Nov 21, 2025
img
দেশের বাজারে স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ, আজ থেকে কার্যকর Nov 21, 2025
img
রাফিয়ার বাড়িতে ককটেল ও অগ্নিসংযোগ, প্রশ্ন তুললেন ঢাবি শিক্ষক মোনামি Nov 21, 2025
img
অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্ট শুরু আজ Nov 21, 2025
img
বগুড়ায় হলুদ-মরিচের গুঁড়ায় কাপড়ের রং মিশিয়ে ভেজাল Nov 21, 2025
img
সশস্ত্র বাহিনী দিবস আজ Nov 21, 2025
img
ডিভোর্সি নারীর দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে খোলামেলা মতামত অনুরাধা মুখার্জির Nov 21, 2025
img
জীবনের পথচলায় সততাকেই মূল শক্তি বললেন অজয় দেবগন Nov 21, 2025
img
ইচ্ছে করেই ফুটবল নিয়ে স্লেজিং করেছি: আসিফ আকবর Nov 21, 2025