পাহাড় থেকে সেনাবাহিনী সরানোর কোনো প্রশ্নই আসে না : ডা. জাহেদ উর রহমান

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘আমি জন্মেছি, বড় হয়েছি রাঙামাটি জেলায়। খুব ছোটবেলায় যখন শান্তিবাহিনীর প্রকোপ ছিল, তখন এই অপহরণের ঘটনার কথা শুনতাম দীর্ঘদিন। এগুলো দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল, আবার চালু হয়েছে। সুতরাং এই ভলেটাইল প্রেক্ষাপটে সেনাবাহিনী এখান থেকে প্রত্যাহার করার কোনো প্রশ্নই আসে না, এটাই ফুল স্টপ।
এরপর আর কোনো আলোচনা নেই।’

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেলে এক ভিডিওতে তিনি এসব কথা বলেন। ডা. জাহেদ বলেন, ‘এটাও জরুরি কথা, সেনাবাহিনী যখন অপারেট করছে তাদের দিক থেকে কোনো মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগ কিংবা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো কোনো ঘটনা ঘটছে কি না, সেটা খুব সিরিয়াস সার্ভেইল্যান্সের মধ্যে রাখা দরকার। আমি এটা বুঝতে প্রস্তুত আছি।

তিনি বলেন, ‘একটা দেশের এ রকম একটা অঞ্চলে সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে, এত ওয়াইড স্কেলে এবং সেটা বেশ খানিকটা হলেও জনগণের জীবনযাত্রাকে হ্যাম্পার করবে। আমি এটা জানি। এটা আমি বোঝাতে প্রস্তুত আছি। কিন্তু তার পরও আসলে কোনোভাবে আমরা এই দাবিটা করতে পারি না। এই দাবিটা করা এবং এ রকম কোনো পদক্ষেপ নেওয়া আমাদের জন্য একটা ঐতিহাসিক ভুল হবে।’ 
 
সেনাবাহিনী প্রত্যাহার ইস্যুতে তিনি বলেন, ‘আমাদের পাহাড়ি এলাকার একটা বিরাট অংশের সীমানা ভারত ও মায়ানমারের সঙ্গে। বিরাট একটা অংশের সীমানা ওয়েল ডেমার্কেটেড না, ওয়েল ডিফেন্ডেড না, এই রকম প্রেক্ষাপটে সেনা সদস্য সরানো উচিত হবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমি অনেক ঘাঁটাঘাঁটি করে দেখলাম যে কেন জুম্ম ছাত্র-জনতা অভিযুক্তকে মুহূর্তের মধ্যে গ্রেপ্তার করার পরও এতটা উত্তেজিত হয়েছে? এটা কি তাদের সেই পুরনো স্ট্রেস যে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘাতকে উসকে দেওয়া? সেটা যদি হয়ে থাকে তা খুবই ভয়ংকর ব্যাপার। আর এই যে ভারত বা অন্য কেউ সুযোগ নিতে পারে, তার মানে এখন একটা টেনশন আছে।

ডা. জাহেদ বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন থেকে জানি যে পার্বত্য যে শান্তিচুক্তি হয়েছিল, এরপর ভূমি কমিশন মানে ভূমির মালিকানা নিশ্চিত হওয়াটা আজও করা যায়নি এবং এটা হওয়া ছাড়া এই জিনিসটা আসলে কোনোভাবে হবে না। বাঙালি যারা ওখানে কয়েক প্রজন্ম ধরে আছেন, এখন তাদের সেটলার বলা হচ্ছে। এই যে একটা দেশের মানুষ তার নিজের আরেকটা ভূমিতে গিয়ে থেকেছেন; হ্যাঁ, নিশ্চিতভাবে এর মধ্যে পাহাড়িদের ওনারশিপে থাকা জমি আছে, সেগুলো আবারও বলছি ভূমি কমিশনের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হওয়া দরকার। কিন্তু সেটলার বলে তাদের অবাঞ্ছিত বলার টেনডেন্সি, এগুলো প্রত্যেকটা আসলে পরিস্থিতিকে আরো বেশি ভোলেটাইল করে তুলবে।
 
তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান প্রেক্ষাপটে বাঙালি-পাহাড়িদের সব কিছু রাজনৈতিকভাবে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান হতে হবে। এটা সমাধান হওয়ার আগ পর্যন্ত যেকোনো ঘটনাকে ভিত্তি ধরেই পার্বত্য অঞ্চল অশান্ত হয়ে উঠবে। এই সুযোগ আওয়ামী লীগ হোক, ভারত হোক-যে কেউ নেওয়ার চেষ্টা করবে। তার আগে পাহাড়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থা ফিরে আসার আগ পর্যন্ত সেনাবাহিনী সরানোর কথা কোনোভাবেই আমরা ভাবতে প্রস্তুত নই। সেনাবাহিনী তার দায়িত্ব নিয়ে ওখানে থাকবে। মানবাধিকার রক্ষা করে থাকবে।

এসএস/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ক্ষমার মধ্যেই অনেক বড় শক্তি আছে: আমির খান Nov 16, 2025
img
এইচএসসির খাতা পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ Nov 16, 2025
img
দাদুর জীবনীতে অনুপ্রেরণা পেলেন শন ব্যানার্জি Nov 16, 2025
img
স্টারবাকস বয়কটের ডাক দিলেন মামদানি Nov 16, 2025
img
আমার স্বামীকে হতে হবে ব্যাড সিঙ্গার: শেহনাজ গিল Nov 16, 2025
img
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক অভিযানে আ.লীগের ৩ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ Nov 16, 2025
বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে সামরিক শক্তি বাড়াতে তৎপর ভারত, নেপথ্যে কী Nov 16, 2025
কিং খানের নামে বিলাসবহুল হোটেল, আপ্লুত অভিনেতা Nov 16, 2025
img
দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র , পুলিশি নজরে নোরা Nov 16, 2025
img
ইইউর বাজারে বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে Nov 16, 2025
img
আইপিএলের ১০ দলের রিটেইন ও রিলিজ ক্রিকেটারের তালিকা প্রকাশ Nov 16, 2025
img
রাজধানীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ১৬ Nov 16, 2025
img
তারেক রহমানের ৩১ দফাই রাষ্ট্র গঠনে নির্দেশনা: মনিরুল হক চৌধুরী Nov 16, 2025
img
স্যামসনকে ২৪ কোটি টাকায় এনেও অধিনায়ক বানায়নি চেন্নাই Nov 16, 2025
img
লিওনেল স্কালোনির নেতৃত্বে স্বপ্নপূরণ আর্জেন্টিনার ৫৯ ফুটবলারের Nov 16, 2025
img
নির্বাচনের পক্ষে ব্যাপক ঐকমত্য দেশে বিরাজ করছে : ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য Nov 16, 2025
img
সাতক্ষীরা-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তন দাবিতে সমাবেশ Nov 16, 2025
img
বিবিসির কাছ থেকে ৫০০ কোটি ডলার চাইতে পারেন ট্রাম্প! Nov 16, 2025
img
‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচির ঘটনায় গোপালগঞ্জে ২ মামলা, গ্রেপ্তার ৫ Nov 16, 2025
img
মায়ানমারে ৩৫ বছর পর তানিনথারি অঞ্চলের মডং শহর দখলে নিল কারেন বিদ্রোহীরা Nov 16, 2025