সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেছেন, ‘আলজাজিরার উপস্থাপক মেহদী হাসানের সঙ্গে আলাপে ড. মুহাম্মদ ইউনূস আওয়ামী লীগ নিয়ে কিছুটা সহবিরোধী বক্তব্য দিলেও একটি বিষয় স্পষ্ট করেছেন- আওয়ামী লীগের লোকজন নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে। মেহদী হাসান তাকে প্রশ্নে করেন, আওয়ামী লীগ কেন রাজনীতি বা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, এটা কি কোনো গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত? জবাবে ড. ইউনূস বোঝানোর চেষ্টা করেন যে আওয়ামী লীগ দলগতভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, কারণ তারা নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তবে আওয়ামী লীগ একটি বৈধ রাজনৈতিক দল, যদিও বর্তমানে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ। যেকোনো সময় সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হতে পারে।
দলগতভাবে না পারলেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতে পারবেন এবং তাদের সমর্থকরা তাদের ভোট দিতে পারবেন- এ ব্যাপারে কোনো বাধা নেই।’
বুধবার (১ অক্টোবর) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে মোস্তফা ফিরোজ এসব কথা জানান।
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘এখন আওয়ামী লীগের কোনো আনুষ্ঠানিক অবস্থান নেই। তাদের দলকে রাজনীতিতে অংশ নিতে বাধা দেওয়া হয়েছে।
তবে ড. ইউনূস বলছেন, তাদের সমর্থকরা ভোট দিতে পারবেন, কারণ তারা বৈধ ভোটার। নির্বাচনে যেহেতু একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, আওয়ামী লীগের সমর্থকরা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিতে পারবেন। শুধু আওয়ামী লীগের নিজস্ব প্রতীক থাকবে না। এর মানে দাঁড়ায়- এ পরিস্থিতি অনেকটা ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের মতো।
গত নির্বাচনে পিটিআইয়ের প্রতীক নিষিদ্ধ করেছিল পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। ফলে তারা দলগতভাবে অংশ নিতে পারেনি বরং সবাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল।’
মোস্তফা ফিরোজ আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগ হয়তো ইমরান খানের পিটিআইয়ের মতো একটি পথের দিকে এগোতে পারে- এ সম্ভাবনার ইঙ্গিত মেলে অন্তত ড. ইউনূসের বক্তব্য থেকে। ড. ইউনূস বলেন, আওয়ামী লীগের সমর্থক আছে।’ মেহদী হাসান তাকে প্রশ্ন করেন, ‘তাদের তো বাংলাদেশে একটি বড় সমর্থক গোষ্ঠী রয়েছে, এটা কি আপনি অস্বীকার করবেন?’ উত্তরে ড. ইউনূস বলেন, ‘অবশ্যই না, তারা দীর্ঘ সময়ের একটি রাজনৈতিক দল।’
এরপর মেহদী হাসান প্রশ্ন করেন, ‘আপনি হয়তো অস্বীকার করবেন না যে তাদের লাখ লাখ সমর্থক আছে?’ তখন তিনি বলেন, ‘আমি লাখ লাখ বলব না, তবে তাদের সমর্থন রয়েছে। কতজন এখন আছে, সেটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না।’ একই সঙ্গে তিনি আরো স্পষ্ট করেন, ‘দলটিকে নিষিদ্ধ করা হয়নি, তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে দলটি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।’ আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে- রাজনৈতিক দলটির এই চরিত্র বিবেচনা করেই নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কেএন/টিএ