নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা চিত্র নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন দীর্ঘ সাত মাস ধরে অসুস্থ। তিনি ৬ মাস ধরে লন্ডনে চিকিৎসাধীন। আজ নিসচা আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইলিয়াস কাঞ্চনের ছেলে মিরাজুল মইন জয় কানাডা থেকে ভার্চুয়ালি এক বক্তব্যে এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন আমার বাবা ইলিয়াস কাঞ্চন ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত এখনো চিকিৎসা চলমান রয়েছে। তিনি এ বছরের শুরুতে শারীরিক নানা সমস্যার মুখোমুখি হন। পরবর্তীতে তার শারীরিক অবস্থা দিন দিন অবনতি হতে থাকলে পরিবারের সদস্যরা গত ৯ এপ্রিল ঢাকার ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ণ হাসপাতালে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
তারপর দীর্ঘ প্রায় ৬ ঘন্টা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার মাথার এমআরআই করা হয়। ২ দিন পরে রিপোর্টের ফলাফল জানা যায় তার মাথায় টিউমার হয়েছে। অবশ্য আগে থেকেই তিনি কথা বলতে গিয়ে আটকে যেতেন। অনেক কিছু মনে করতে কষ্ট হতো। এমআরআই রিপোর্টে জানা গেল টিউমারজনিত কারণে এই সমস্যা দেখা গিয়েছে। এই রিপোর্ট নিয়ে গত ১৩ এপ্রিল আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিউট অফ নিউরোসাইন্স-এ নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে ডাক্তারগণ একটি বোর্ড গঠন করে মতামত দেন তার মাথায় অপারেশন করা ক্রিটিক্যাল হবে। কারণ টিউমারটি ব্রেনের অনেক গভীরে গুরুত্বপূর্ণ নার্ভের সংযোগস্থলে অবস্থান করছে। ডাক্তারদের এই মতামত জানার পরে পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত আসে লন্ডনে নিয়ে চিকিৎসা করার। সিদ্ধান্ত মোতাবেক দ্রুত কাগজপত্র ঠিক করে গত ২৬ এপ্রিল তিনি লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন।
লন্ডনে পৌঁছানোর পরের দিন থেকেই সেখানকার হারলি স্ট্রিট ক্লিনিকে নিউরোসার্জারি ডাক্তারের অধীনে নেয়া হয়। দীর্ঘ তিন মাস নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে গত ৫ আগস্ট লন্ডনের উইলিংটন হাসপাতালে প্রফেসর ডিমিট্রিয়াসের নেতৃত্বে তার মাথায় অস্ত্রপচার করা হয়। ডাক্তার অপারেশনের আগে জানান পুরো টিউমার অপসারণ করা যাবে না। এতে জীবনহানিসহ প্যারালাইসড হয়ে চলনশক্তি ও কথা বলার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারেন তিনি।
ডাক্তারের সিদ্ধান্তের ওপর আস্থা রেখে টিউমারটির কিছু অংশ অপসারণের জন্য অস্ত্রোপচারের অনুমতি দেন তার পরিবার। বাকি অংশ রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপির মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করা হবে। মোট ৩০ দিন রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপি দিতে হবে। সপ্তাহে পাঁচ দিন করে ৬ সপ্তাহ চলবে এই রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপির কাজ। এই মাসেই শুরু হবে চিকিৎসার এই ধাপ। চলবে ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত। এরপর ৪ সপ্তাহ ডাক্তারের অবজারভেশনে থাকবেন।
আইকে/টিএ