মা ইলিশের প্রজননের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা ৪ অক্টোবর হতে শুরু হওয়ার খবরে শেষমুহূর্তের দিনে বেচাকেনার হাঁকডাকে গরম চাঁদপুরের ইলিশের হাটবাজারগুলো। শেষ দিনে দাম আকাশচুম্বী নিলেও সংকট পদ্মা-মেঘনা নদীর ইলিশের।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) শহরের বড় স্টেশন মাছঘাটসহ আশপাশের বাজার ঘুরলে ইলিশ নিয়ে কেনাবেচায় ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝে এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতি দেখা যায়। এ দিনে ২ থেকে আড়াই কেজি ওজনের পদ্মার ইলিশের দাম সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। তবু মাছঘাটে দেখা গেছে ইলিশ কিনতে আসা ক্রেতাদের ভিড়।
ক্রেতারা জানান, বরফকল সব বন্ধ থাকবে। দূর-দূরান্তে আত্মীয়স্বজনদের কাছে ইলিশ ২২ দিন পাঠাতে পারব না। তাই দাম যাই হোক এখন সাধ্যমতো ইলিশ কিনে আজই পাঠাতে চাচ্ছি। তবে এখানে ইলিশের চেয়ে ক্রেতা বেশি হওয়ায় দাম লাগামহীন রাখছেন বিক্রেতারা।
রফিক নামে এক ক্রেতা জানান, আমি চরভৈরবী, আনন্দবাজার, আখনের হাটসহ বেশ কয়েকটি আড়তে গিয়ে দেখলাম পদ্মা মেঘনার ইলিশ একেবারেই নেই, যা আছে তাও দাম হাতের নাগালের বাইরে। এখন বড় স্টেশনে এসে হাতিয়া, রামগতির ছোট সাইজের ইলিশ কিনতে গিয়েও উচ্চ দাম হওয়ায় নিতে পারছি না। শুধু ইলিশই নয় বরং ইলিশের ডিমের দামও বেশি চাচ্ছে।
তাই আর কেনা হচ্ছে না ইলিশ বা তার ডিম।
হরিণা ঘাটের খুচরা ইলিশ বিক্রেতা আইয়ুব আলী বলেন, গত কয়েকদিন ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে। যে কারণে ছোট সাইজের ইলিশ হালিপ্রতি (২০০ গ্রাম ওজন) বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০০ থেকে ২৫০০ টাকা। আর দুই কেজি ২০০ গ্রাম থেকে আড়াই কেজি পর্যন্ত ওজনের প্রতি কেজি পদ্মার ইলিশ বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকায়।
হরিণা মাছ ঘাটের প্রবীণ মাছ ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম ছৈয়াল বলেন, এবার মৌসুমে কমবেশি ইলিশ পাওয়া গেছে। তবে তাজা ইলিশের চাহিদা বেশি থাকায় দাম কমেনি। বড় সাইজের ইলিশের চাহিদা দেশজুড়ে। যারা অনলাইনে ইলিশ বিক্রি করেন তারাও অনেকে এখান থেকে ইলিশ নিতে ভিড় জমিয়েছেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সদরের জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক বলেন, চলতি বছরে জাটকা রক্ষায় প্রশাসন কঠোর ছিল। ফলে জেলেরা বড় সাইজের ইলিশ পাচ্ছে। তবে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার খবর তারা দাম অনেক বেশি রাখার বিষয়টি তদারকি করা হবে।
এমকে/এসএন