সংগীত জগতের কিংবদন্তি সাধক ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ১৬৩ তম জন্মদিন আজ। ১৮৬২ সালের এই দিনে তৎকালীন ত্রিপুরা প্রদেশের, বর্তমান বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামে এক সংগীতপ্রেমী পরিবারে তার জন্ম হয়। পিতা সদর হোসেন খাঁ নিজেও ছিলেন বিখ্যাত সংগীতজ্ঞ। সেই সুরের ঐতিহ্যই পরবর্তীকালে আলাউদ্দিন খাঁ- কে বিশ্ব দরবারে ‘সুরসম্রাট’ উপাধি এনে দেয়।
১৯৩৫ সালে বিশ্ব ভ্রমণে বের হন তিনি। এ সময় তিনি ইংল্যান্ডের রানী কর্তৃক এই ‘সুর সম্রাট’ খেতাবপ্রাপ্ত হন। ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় খেতাব পদ্মভূষণ ছাড়াও পদ্মবিভূষণ, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেশীকোত্তমসহ দিল্লি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাভ করেন সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি।
শৈশবে ‘আলম’ নামে পরিচিত ছিলেন আলাউদ্দিন খাঁ। ছোটোবেলা থেকেই প্রকৃতি ও সুরের প্রতি ছিলেন অনুরাগী। বাল্যকালে অগ্রজ ফকির আফতাবউদ্দিন খাঁর নিকট সঙ্গীতে তার হাতেখড়ি হয়। তবে তার সংগীতগুরু ছিলেন আগরতলার রাজদরবারের সভা সংগীতজ্ঞ ও তানসেন বংশীয় রবাবী ওস্তাদ কাশিম আলী খাঁ। মাত্র দশ বছর বয়সে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে যাত্রাদলে যোগ দেন। এই সময়ই গ্রাম-বাংলার জারি, সারি, বাউল, ভাটিয়ালি, কীর্তনসহ বিভিন্ন লোকগানের সঙ্গে পরিচিত হন তিনি।
পরে কলকাতায় গিয়ে প্রখ্যাত সঙ্গীতসাধক গোপালকৃষ্ণ ভট্টাচার্য (নুলো গোপাল)-এর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। গুরু মৃত্যুর পর তিনি যন্ত্রসংগীতে মনোনিবেশ করেন এবং বাঁশি, সেতার, বেহালা, তবলা, মৃদঙ্গসহ বহু বাদ্যযন্ত্রে পারদর্শিতা অর্জন করেন।
ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর শিষ্যদের মধ্যে রয়েছেন তার পুত্র ওস্তাদ আলী আকবর খান এবং জামাতা পণ্ডিত রবিশঙ্কর। উল্লেখ্য, তারা দুজনই বিশ্বখ্যাত সংগীতশিল্পী।
আলাউদ্দিন খাঁর জন্মদিনে আজ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির যৌথ আয়োজনে পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক লালবাগ কেল্লায় অনুষ্ঠিত হবে এক বিশেষ ধ্রুপদী সংগীত সন্ধ্যা। অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর প্রপৌত্র ওস্তাদ সিরাজ আলী খানসহ দেশের তরুণ ও প্রতিভাবান শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পীরা।
কেএন/টিকে