দীর্ঘ ৪৫ বছরের অপেক্ষা ফুরানোর সুযোগ পেতে হলে আজ জিততেই হতো বাংলাদেশকে। কিন্তু ২০২৭ এশিয়া কাপ খেলার সেই স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে পারেননি কোচ হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা।
হংকং চায়নার কাছে ৪-৩ ব্যবধানে হেরে স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়েছে। ১৯৮০ সালে প্রথম এবং শেষবারের মতো মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের টুর্নামেন্টে খেলেছিল।
এর পর থেকে শুধুই হতাশার গল্প লিখেছে চলছে বাংলাদেশ।
অথচ, ঘরের মাঠ জাতীয় স্টেডিয়ামে স্বপ্নের মতো শুরু করেছিল বাংলাদেশ। ম্যাচের ১৩ মিনিটে যে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় স্বাগতিকরা। গোলটাও ছিল দেখার মতো।
বাঁ প্রান্ত থেকে ফ্রি কিকে গোলটি করেন হামজা চৌধুরী। লেস্টার সিটির মিডফিল্ডারের ডান পায়ের বাঁকানো জোরালো শটটি মুহূর্তের মধ্যে হংকংয়ের জাল খুঁজে নেয়। তাতে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় গোলের দেখা পান হামজা।
লিড নিয়ে বিরতিতে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ।
কেননা প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটের খেলা চলছিল। কিন্তু যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে হংকংয়ের পাওয়া কর্নার ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেনি বাংলাদেশ। ফাহিমের হেড বক্সের মধ্যে ফাঁকায় পেয়ে সহজে জালে জড়াতে ভুল করেননি হংকংয়ের ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত ফরোয়ার্ড এভারটন কামারগো। তাতে ১-১ সমতায় বিরতিতে যায় দুই দল।
বিরতি শেষে খেলতে নেমে প্রথমার্ধের দারুণ লড়াইয়ের রেশটা যেন কোথায় হারিয়ে ফেলল বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমেই যে ভুল করে বসলেন বাংলাদেশি ডিফেন্ডার শাকিল আহাদ তপু। ৫০ মিনিটে শাকিল সতীর্থকে ভুল পাস দিলে তা থেকে হংকংকে লিড এনে দেন রাফায়েল মারকিয়েস। ৫৩ মিনিটে আরেকটি গোল পাওয়ার কথা ছিল তাদের।
অল্পের জন্য প্রথম গোলদাতা এভারটনের হেডটা বারের ওপর দিয়ে যায়।
তবে সেই আক্ষেপ ৭৫ মিনিটে ঠিকই পূরণ করে হংকং। সফরকারীদের ৩-১ গোলের লিড এনে দেন জোড়া গোলদাতা রাফায়েল। গোল শোধ দিতে পরে মরিয়া হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। শেষ ১৫ মিনিটে দুই গোল দিয়ে ৩-৩ সমতাও ফেরে বাংলাদেশ।
৮৪ মিনিটে ব্যবধান কমান শেখ মোরসালিন। তাতে অবশ্য প্রতিপক্ষের গোলরক্ষকের ভুল ছিল। তার হাত থেকে বল ফসকে গেলে গোল দিতে ভুল করেননি মোরসালিন। আর সমতায় ফেরার গোলটি করেন শমিত শোম। যোগ করা সময়ের নবম মিনিটে মোরসালিনের কর্নার থেকে হেডে গোল করেন শমিত। বাংলাদেশের হয়ে তার প্রথম গোল।
শমিতের গোলের পর বুনো উল্লাসে মেতে উঠেছিল বাংলাদেশি খেলোয়াড়রাসহ পুরো গ্যালারি। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে পিনপতন নীরবতা মেনে আসে পুরো স্টেডিয়ামে। ৩-৩ ড্রয়ে যখন মাঠ ছাড়ার স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ তখনই গোল হজম করে বসে। যোগ করা সময়ের ১১ মিনিটে বাংলাদেশের হৃদয় ভেঙে হ্যাটট্রিক তুলে নেন রাফায়েল।