মোস্তফা ফিরোজ

কমিশন কি পারবে সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করতে?

সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এখন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে কি? রাজনৈতিক জোটের টানাপড়েন, তারেক রহমানের দেশে ফেরা কিংবা এনসিপির অবস্থান, সব আলোচনা ছাপিয়ে এখন মূল উদ্বেগ ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা। নির্বাচন কমিশন নিজেই বলছে, এবারের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট আয়োজন। কিন্তু পুলিশের পক্ষে একা পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন, সেনাবাহিনীরও পর্যাপ্ত জনবল নেই। ফলে প্রশ্ন উঠছে, কমিশন কি সত্যিই পারবে একটি নিরাপদ, নির্ভয় ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজন করতে?

শনিবার (১১ অক্টোবর) নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘ভয়েস বাংলা’-তে তিনি এসব কথা বলেন।  

মোস্তফা ফিরোজ বলেছেন, বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে বনিবনা হচ্ছে না। বিএনপি-জামায়াত ও এনসিপিকে নিয়ে একটি জটিলতা তৈরি হয়েছে, যা আসলে জোট সংকট। জামায়াতের নেতৃত্বে একটি ইসলামী জোট এবং বিএনপির নেতৃত্বে আরেকটি জোট গঠনের কথা শোনা যাচ্ছে। এদিকে, তারেক রহমান দেশে ফিরবেন কি না সেটাও একটি আলোচনার বিষয়।

তবে আসন্ন নির্বাচনের সবচেয়ে বড় সমস্যা কোনটি সে বিষয়ে আজ নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট করেছে। বলেছে, সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নিরাপত্তা।অর্থাৎ ভোটকেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মানুষ যেন ভয়-ভীতিহীন ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে পারে, এটাই এখন প্রধান প্রশ্ন। ভোট দিলে সেই ভোটের বাক্স অক্ষত থাকবে কি না, ভোট গণনা সঠিকভাবে হবে কি না, এ নিয়েই মূল উদ্বেগ।

তিনি বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে এই বিষয়গুলো ভাবিয়ে তুলছে। নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নিরাপত্তা বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। যে কেন্দ্রে সমস্যা হবে সেই কেন্দ্রেই ভোট হবে বলেও জানানো হয়। অনেক কেন্দ্রে তারা হয়তো নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবে না। যদি নিয়ন্ত্রণ না রাখতে পারে তাহলে ভোট হয়ে যাবে।

এ ছাড়া অন্য কোনো গতি দেখে না নির্বাচন কমিশন। এখন কতটা কেন্দ্র সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন করা যাবে, এটাও একটা দেখার বিষয় আর কতগুলো বন্ধ করতে হবে সেটাও দেখার বিষয়। যদি ব্যাপকসংখ্যক বন্ধ করতে হয় তাহলে এটা আর ভোটের মতো থাকবে না। এটা ভোটের কোনো ক্যাটাগরির মধ্যে পড়বে না।

মোস্তফা ফিরোজ আরো বলেন, এনসিপি শাপলা পেল কি না, তারেক রহমান দেশে ফিরবেন কি না, কিংবা নির্বাচনকালীন জোট গঠিত হবে কি না, এসবের চেয়ে বড় বিষয় হলো, যেভাবেই হোক না কেন, স্বতন্ত্রভাবে, দলীয়ভাবে বা জোটগতভাবে, নির্বাচনটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই কারণেই সরকার বলছে, সেনাবাহিনী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে মাঠে থাকবে। কারণ, পুলিশের পক্ষে একা পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। পুলিশ এখন নিজেই জনতার ক্ষোভ বা ‘মব অ্যাটাক’-এর শিকার হচ্ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক বছরে প্রায় ১৯২টি ঘটনায় পুলিশ মবের হামলার শিকার হয়েছে।

তিনি বলেন, আজ চট্টগ্রামে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে আয়োজিত কর্মশালায় নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট করে বলেছে, সামনের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে নিরাপত্তা। কিন্তু এই নিরাপত্তা দেবে কে? পুলিশের পক্ষে একা তা সম্ভব নয়, আর সেনাবাহিনীরও পর্যাপ্ত জনবল নেই যে তারা পুরো দায়িত্ব নিতে পারবে।

মোস্তফা ফিরোজ বলেন, আমি আগেই বলেছিলাম, রাজনৈতিক দলগুলো কেন এইবার ধারাবাহিকভাবে এতগুলো সংলাপ করেও কোনো কার্যকর সমাধানে পৌঁছাতে পারল না, এটাই এখন বড় প্রশ্ন। যদি তারা চাইত তাহলে অন্তত ভোটকে ভাগ করে ৫০টি আসন করে ৩-৪ দিনে ধাপে ধাপে নির্বাচন আয়োজন করা যেত। ভারতে তো এক মাস ধরে ভোট হয়, তাতে কোনো সমস্যা হয় না; তাহলে আমাদের দেশে ৩-৪ দিনে নির্বাচন হলে সমস্যা কি হতো? এটা বিবেচনা করা দরকার ছিল। এখনো তিন-চার মাস সময় আছে, দেখা যাক, পরিস্থিতি কোন দিকে যায়।

এমআর/টিকে 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিএনপি সরকারে এলে জিডিপির ৫ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় করবে : শামা ওবায়েদ Oct 11, 2025
img
জুলাই অভ্যুত্থানের পর সাংবাদিকদের অবারিত স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে: আজাদ মজুমদার Oct 11, 2025
img

সামান্তা শারমিন

শিক্ষা ব্যবস্থার সমস্যাগুলোকে আইডেন্টিফাই করতে হবে Oct 11, 2025
img
রোববার থেকে দেশে প্রথমবারের মতো টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু Oct 11, 2025
img
মাচাদোকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ায় তীব্র নিন্দা ইরানের Oct 11, 2025
img
জামায়াত সৎ মানুষদের মনোনয়ন দিয়েছে : এটিএম আজহার Oct 11, 2025
img

জিল্লুর রহমানের বিশ্লেষণ

আবারও ভেল্কিবাজি, রাজনীতিতে কালো ছায়া Oct 11, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নিলো চীন Oct 11, 2025
img
গাজায় চালু হচ্ছে ব্যাংকিং কার্যক্রম Oct 11, 2025
অনুশীলনের মাঝেই ৬ কোটি টাকার ক্ষতি রোহিতের Oct 11, 2025
ব্যারিস্টার নুসরাতের হাতে আংটি পরালেন ইশরাক Oct 11, 2025
কি কারণে রাকসু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন ক্রীড়া সম্পাদক প্রার্থী? Oct 11, 2025
নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হলে ভিন্নমত বিশেষজ্ঞদের! Oct 11, 2025
চাকরি হারিয়ে যা বলছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা! Oct 11, 2025
img
এনসিপি দ্বায়িত্বে এলে দুর্নীতিবাজদের মুখোশ উন্মোচন করা হবে: সারজিস Oct 11, 2025
img
৩ ট্রিলিয়ন ডলারের হালাল বাজারেও পিছিয়ে বাংলাদেশ Oct 11, 2025
img
আওয়ামী লীগকে দলে ভেড়াতে সব দল উঠেপড়ে লেগেছে : ডিআইজি পলাশ Oct 11, 2025
img
ফুটবল খেলা শেষ হতেই যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় নিহত ৪ Oct 11, 2025
img

প্রেস সচিব

প্রতিরক্ষা বাহিনীর আর কোনো সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পরিকল্পনা নেই Oct 11, 2025
img
ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে মেসির না খেলার কারণ Oct 11, 2025