বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাসে যুক্ত হলো নতুন এক নাম -কেপ ভার্দে। আফ্রিকার ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্রটি নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বকাপের মূল পর্বে। রোববার রাতে প্রাইয়ার ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে এসওয়াতিনিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ২০২৬ সালের যুক্তরাষ্ট্র -মেক্সিকো-কানাডা বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করে তারা।
এর মাঝে একটি ইতিহাসও গড়েছে তারা। ৫ লাখেরও কিছু বেশি জনসংখ্যার কেপ ভার্দে হয়ে গেল ইতিহাসে দ্বিতীয় সবচেয়ে ছোট জনসংখ্যার দেশ, যারা ফুটবল বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছে-২০০৬ সালের আইসল্যান্ড (প্রায় ৩ লাখ জনসংখ্যা) ছাড়া এই কৃতিত্ব আর কারও নেই।
দ্বীপদেশটির রাজধানী প্রাইয়ার স্টেডিয়ামটি রোববার ছিল উৎসবের এক কেন্দ্র। ১৫ হাজারেরও বেশি দর্শক নীল রঙে রাঙানো গ্যালারি থেকে একটানা গর্জন তুলছিলেন নিজেদের দল ‘ব্লু শার্কস’-এর জন্য। ম্যাচের প্রথমার্ধে গোল না পেলেও দ্বিতীয়ার্ধে যেন ফুটে ওঠে ইতিহাসের নেশা।
৪৮তম মিনিটে লিভ্রামেন্তো গোল করে উচ্ছ্বাসে ফাটিয়ে দেন স্টেডিয়াম। ছয় মিনিট পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন উইলি সেমেদো। আর ইনজুরি টাইমে বদলি হিসেবে নামা স্টোপিরা যোগ করেন শেষ গোলটি -তিন গোলের জয়ে নিশ্চিত হয় কেপ ভার্দের বিশ্বকাপের স্বপ্নপূরণ।
কেপ ভার্দের ফুটবল ফেডারেশন মাত্র ২৫ বছর আগে, ২০০০ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ বাছাইয়ে অংশ নিয়েছিল। এরপর দীর্ঘ প্রস্তুতি, সীমিত অবকাঠামো ও সংকীর্ণ বাজেটের মধ্যেও অবশেষে ২০২৬ বিশ্বকাপে তারা জায়গা করে নিল।
মাত্র ৪ হাজার বর্গকিলোমিটারের এই দ্বীপদেশ এখন বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে ছোট ভৌগোলিক এলাকা থেকে বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার রেকর্ডও গড়েছে। এর আগে এই রেকর্ড ছিল ২০০৬ সালে জার্মান বিশ্বকাপে খেলা ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর দখলে (৫ হাজার বর্গকিলোমিটার)।
২০২৫ সালেই স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন করছে কেপ ভার্দে। আর সেই সোনালি মাইলফলকের বছরে ফুটবল বিশ্বকাপের মঞ্চে পা রাখা যেন জাতির জন্য এক স্বপ্নের বাস্তব রূপ।
কোচ বাবিস্তা-যিনি একসময় স্পেনের বাদাজোজ ক্লাবে খেলেছেন-তার নেতৃত্বে দলটি ইতিহাস গড়েছে। তিনি ম্যাচ শেষে বলেন, “এই দলটা শুধু ফুটবল খেলেনি, তারা একটা জাতির বিশ্বাস পুনর্জাগরিত করেছে। আমরা প্রমাণ করেছি, ছোট দেশ হলেও বড় স্বপ্ন দেখা যায়।”
পিএ/টিএ