সাড়ে ৫ হাজার টাকার বেতনে শুরু করেছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। অনেক পরিশ্রম, সংগ্রাম করে জীবনে সফল হয়েছেন। তরুণ আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে তিনি নিজের সফলতার গল্প তুলে ধরেছেন। তাদের আইনপেশায় লেগে থাকার ও পরিশ্রম করে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে এ পরামর্শ দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

অনুষ্ঠানে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘ইয়াং লইয়ারদের মধ্যে আপনারা যারা নতুন প্র্যাকটিস করতে এসে হতাশ হন, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি। আমি যেদিন লইয়ার হলাম, লইয়ার হওয়ার পর বিয়েও করে ফেললাম। আমার কাছে বাসা ভাড়া নেই। সিনিয়রের সঙ্গে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করি। দিনের শেষে রিকশা ভাড়াটাও নিজের পকেট থেকে দিতে হয়।

বউ একটা এনজিওতে চাকরি নিলেন। বেতন সাড়ে চার হাজার টাকা। আমি একটা চাকরি নিলাম আইন ও সালিশ কেন্দ্রে আইনজীবী হিসেবে। বেতন সাড়ে ৫ হাজার টাকা। দুইজনের ১০ হাজার টাকা বেতন দিয়ে সংসার শুরু করেছিলাম। সেখান থেকে ৩ হাজার টাকার বাসা ভাড়া করে থাকা শুরু করলাম। প্রতিদিন বউয়ের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নিয়ে যেতাম, যাতে রিকশা ভাড়াটা হয়। এটা করতে করতে যখন কাজ শেখা শুরু করলাম, তখন মক্কেল আসা শুরু করলো। আমাকে ডিজহনেস্ট হতে হয়নি। আজকে প্রফেশনের এই জায়গায় এসে বলতে পারি, অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছলতা আছে। আপনার যদি স্বপ্ন থাকে আপনি আইনজীবী হবেন, আপনার ডিজহনেস্ট হওয়ার দরকার নেই। শর্টকাট পথ খোঁজার দরকার নেই।

তিনি আরও বলেন, জুনিয়র আইনজীবীরা প্রায়ই শুরুতে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। মামলার জটিলতা, সিনিয়রদের প্রত্যাশা, নিজের দক্ষতা নিয়ে সংশয়, কিংবা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি। কিন্তু মনে রাখতে হবে, প্রতিটি সফল আইনজীবীর যাত্রাই শুরু হয়েছিল ঠিক এই অনিশ্চয়তা থেকে।

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান নিজের জীবনের গল্প তুলে ধরে বলেছেন, তিনি কখনও হার মানেননি। শুরুতে তাকেও উপেক্ষা করা হয়েছে, কাজের সুযোগ ছিল সীমিত, কিন্তু তার অটল পেশাদারিত্ব, পরিশ্রম তাকে পৌঁছে দিয়েছে আজকের অবস্থানে।

অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক বক্তব্য দেন। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও ডেলিগেটরা উপস্থিত ছিলেন।


আইকে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মাদাগাস্কারের ক্ষমতা দখল করল সেনাবাহিনী Oct 14, 2025
img
দুপুর ১২টার মধ্যে প্রজ্ঞাপন না এলে ‘শাহবাগ ব্লকেড’ করবেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা Oct 14, 2025
img
লড়াই করে সমতায় মাঠ ছাড়লেও স্বপ্ন শেষ বাংলাদেশের Oct 14, 2025
img
নেপোটিজম বিতর্ক নিয়ে ‘ব্যঙ্গাত্মক’ জবাব সোনাক্ষীর Oct 14, 2025
img
আগামীর স্বপ্নপূরণে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসতে হবে: ধর্ম উপদেষ্টা Oct 14, 2025
img
রেমিট্যান্স না আসলে সরকারের টিকে থাকা মুশকিল ছিল: প্রধান উপদেষ্টা Oct 14, 2025
img
শিক্ষা উপদেষ্টাকে আইনি নোটিশ Oct 14, 2025
img
জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোটের সুযোগ নেই : গোলাম পরওয়ার Oct 14, 2025
img
সরকারকে পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়নের আহ্বান জামায়াতের Oct 14, 2025
img
শাপলা প্রতীক না পেলে নিবন্ধন নেবে না এনসিপি: সারোয়ার তুষার Oct 14, 2025
img
শাপলা পাব না, এটা আমরা বিশ্বাস করি না : সারজিস Oct 14, 2025
img
হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরো বাড়ল Oct 14, 2025
img
আবারও হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ট্রাম্প Oct 14, 2025
img
ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নিন্দা Oct 14, 2025
img
রূপনগরে আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ Oct 14, 2025
img
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে মোদির প্রশংসা করলেন ট্রাম্প! Oct 14, 2025
img
দুর্নীতিবাজদের নির্বাচনে মনোনয়ন না দেওয়ার আহ্বান দুদক চেয়ারম্যানের Oct 14, 2025
img
‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ নিয়ে স্মৃতিচারণ নোবেলের Oct 14, 2025
img
কঠিন পরীক্ষা সামনে: মির্জা ফখরুল Oct 14, 2025
img
ব্রাজিলকে হারিয়ে ইতিহাস গড়লো জাপান Oct 14, 2025