ডিফেন্ডার তারিক কাজীর ভুলে যখন আরেকটি পরাজয়ের শঙ্কা নিয়ে মাঠ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল বাংলাদেশ, ঠিক তখনই আশার আলো পান হামজা চৌধুরী-শমিত শোমরা। ৭৫ মিনিটে যে ১০ জনের দলে পরিণত হয় হংকং চায়না।
সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ম্যাচে ফিরে বাংলাদেশ। রাকিব হোসেনের গোলে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে হংকংয়ের সঙ্গে ১-১ ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। শেষ দিকে জয়সূচক গোলের চেষ্টা করেও দেখা পাননি হামজা-রাকিবরা। ড্র করেও তাই হতাশাই সঙ্গী হয়েছে বাংলাদেশের। কেননা এশিয়ান কাপের মূলপর্বের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার জন্য বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ম্যাচটি ছিল বাঁচা-মরার। তাই জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না।
ড্র করায় সেই স্বপ্ন চুরমার হয়েছে। ২ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ ‘সি’ তে বাংলাদেশ সবার নিচে। পরের দুই ম্যাচ জিতলেও তাই কোনো লাভ নেই। এখন পর্যন্ত ৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে হংকং। প্রথমার্ধে পেনাল্টিটি ছাড়া কাই তাক স্পোর্টস পার্কে তেমন কোনো আক্রমণই করতে পারেননি বাংলাদেশ-হংকং। বাংলাদেশের আক্রমণ বলতে ২২ মিনিটে পাওয়া এক ফ্রি কিক। বল নিয়ে হংকংয়ের ডি বক্সে আক্রমণে উঠার চেষ্টা করছিলেন শমিত শোম। তাকে আটকাতে না পেরে পেছন থেকে জার্সি ধরে টান দেন হংকংয়ের এক খেলোয়াড়। হামজা ফ্রি কিক নিলেও তা মানব দেয়ালে বাধা পায়।
হংকং এগিয়ে যায় ৩৬ মিনিটে। বক্সের মধ্যে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে প্রতিপক্ষর ফার্নান্দো পেরেইরাকে ফাউল করেন তারিক কাজী। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে হলুদ কার্ড দেখিয়ে পেনাল্টির নির্দেশ দেন। সফল স্পটকিক নেন দলের অধিনায়ক ম্যাট ওর।
বিরতির পর অবশ্য দারুণ খেলেছে বাংলাদেশ। বেশ কিছু আক্রমণ করে। ৪৯ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন সাদ উদ্দিন। তবে তার শট নেওয়ার আগেই হংকংয়ের গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে পড়ে বল নিয়ন্ত্রণে নেন।
অন্যদিকে ৬১ মিনিটে আরেকটি গোলের সুযোগ পায় হংকং। বাংলাদেশের গোলরক্ষক মিতুলকে সামনে এগিয়ে থাকা দেখতে পেরে দূর থেকে শট নিয়েছিলেন হংকংয়ের এক ফরোয়ার্ড। তবে অল্পের জন্য জালে জড়ায়নি। বারের ওপর দিয়ে বাইরের জালে জায়গা নেয়।
৭২ মিনিটে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরার দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন ফাহমিদুল ইসলাম। সাদের ক্রসটা শরীরের কোনো অংশ দিয়ে জালের দিকে রাখতে পারলেই সমতায় ফিরতি বাংলাদেশ। কিন্তু বদলি নামা ফাহমিদুল তা পারেননি। ম্যাচের ৭৫ মিনিটে দুই হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন হংকংয়ের ডিফেন্ডার অলিভার গারবিগ। তাতে ম্যাচে ফেরার দারুণ সুযোগ পান হামজা-জামালরা। সেই সুযোগ কাজেও লাগিয়েছে। ৮৩ মিনিটে বাংলাদেশকে উদযাপনের মুহূর্ত এনে দেন রাকিব হোসেন।
রাকিবের শটের মঞ্চটা তৈরি করে দেন ফাহমিদুল। বাঁ প্রান্ত থেকে ফয়সাল আহমেদ ফাহিম ক্রস করলে গোলবারের সামনে থাকা রাকিবকে হেডে বল দেন ফাহমিদুল। তা থেকে প্রতিপক্ষের গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন রাকিব। শেষে আর কোনো গোল না হলে ১-১ ড্রয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বাংলাদেশকে। কিন্তু সামগ্রিক অর্থে বাংলাদেশের লক্ষ্য ভেস্তে গেছে। এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলার সম্ভাবনা যে শেষ হয়েছে।
এসএস/এসএন