টপ অর্ডার, মিডল অর্ডার কিংবা লোয়ার অর্ডার-আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে জ্বলে উঠতে পারেনি কেউই। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে তো সাইফ হাসান ছাড়া বাকিরা সবাই ছিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলেন। ব্যাটারদের ব্যর্থতার ছাপ পড়েছে সিরিজের ফলাফলেও। তানজিদ হাসান তামিম, জাকের আলী অনিকদের ব্যর্থতায় আফগানদের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। গাজী আশরাফ হোসেন লিপু মনে করেন, বাংলাদেশের ব্যাটিং দুর্বলতা এক্সপোজ হয়ে গেছে।
এশিয়া কাপে সুপার ফোরে উঠা বাংলাদেশের আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজটাও গেছে। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের সবকটিতে ম্যাচ জিতে রশিদ-মোহাম্মদ নবিদের হোয়াইটওয়াশ করে সফরকারীরা। ২০ ওভারের ক্রিকেটে ভালো করলেও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি ওয়ানডেতে। জুলাইয়ের পর ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলতে নেমে রহমানুল্লাহ গুরবাজ, রহমত শাহদের ব্যাটিংয়ে প্রথম ম্যাচেই হারে বাংলাদেশ।
পরের ম্যাচে মেহেদী হাসান মিরাজদের অবস্থা আরও ভয়াবহ। ১৯১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ব্যাটিয়ে নেমে মাত্র ১০৯ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে তো একশ রানও ছুঁতে পারেনি সফরকারীরা। ব্যাটারদের এমন পারফরম্যান্সে বিন্দুমাত্র লড়াইও করতে পারেনি টাইগাররা। পুরো সিরিজে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান এসেছে সাইফের ব্যাট থেকে। তিন ম্যাচে করেছেন ৯১ রান। সমান সংখ্যক ম্যাচ খেলে তাওহীদ হৃদয় ৮৭ ও মিরাজ করেছেন ৭০ রান।
অথচ শীর্ষে থাকা ইব্রাহিম জাদরান করেছেন ২১৩ রান। শেষ দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি পাওয়ারও সুযোগ ছিল ডানহাতি এই ব্যাটারের। গাজী আশরাফ জানান, আফগানিস্তানের বিপক্ষে এমন ফলাফল কেউই প্রত্যাশা করেননি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের অতীত নিকটের সাফল্যকে ম্লান করে দিয়েছে আফগানিস্তান সফর। প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা সাদা বলের ক্রিকেটে বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে উল্লেখযোগ্য কিছু সফলতা পেয়েছি। কিন্তু আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে পারফরম্যান্স আমাদের নিকট অতীতের সাফল্যগুলোকে পুরোপুরি ম্লান করে দিয়েছে।’
‘এমন (আফগানিস্তানের কাছে হোয়াইটওয়াশ) একটা পারফরম্যান্স আমরা যারা ক্রিকেট দেখি, ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত এমনকি যারা খেলেছে- আমার মনে হয় কেউই আশা করেনি এমন রেজাল্ট হতে পারে। এটা একদম এক্সপোজড হয়েছে আমাদের দুর্বলতা। বিশেষ করে আমাদের ব্যাটিংয়ের দুর্বলতা ফুটে উঠেছে। অবশ্যই, যত দ্রুত সম্ভব আমাদের ওভারকাম করতে হবে।’
আফগানিস্তান সফরে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছেন রশিদ। বিশ্বের অন্যতম সেরা লেগ স্পিনারকে খেলার কোনো উপায়ই খুঁজে পায়নি বাংলাদেশি ব্যাটাররা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে তিন ম্যাচে ১১ উইকেট নেন তিনি। ওয়ানডে ক্রিকেটেও ২.৭৩ ইকনোমি রেটে রান দিয়েছেন রশিদ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে রশিদ কিংবা তাদের মানের কোনো স্পিনার না থাকায় স্বস্তি পাচ্ছেন গাজী আশরাফ।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিপক্ষ এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আমরা আবুধাবির সেই পিচেও খেলছি না। ঘরের মাঠে মিরপুরের উইকেটে খেলছি এবং প্রকিপক্ষেও রশিদের মতো কিংবা অন্যান্য স্পিনার যারা ছিল উঁচু মানের সেরকম স্পিনারদের মুখোমুখি করতে হচ্ছে না। এটা আমাদের জন্য কিছুটা স্বস্তির। কষ্টটা এখনো বয়ে বেড়াতে হচ্ছে খেলোয়াড়দের।’
টিজে/এসএন