বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির বিশেষ সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেছেন, ‘বিগত ১৭ বছর পর একটি ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের ফলে বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের জন্য যে রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার প্রয়োজন। তা করার মতো রাজনৈতিক শক্তি, মেধা ও প্রজ্ঞা বিএনপির রয়েছে। আগামী নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র চলছে। তবে বাংলাদেশের জনগণ তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী ভোটের মাধ্যমে সরকার নির্বাচন করবে এবং সেই পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’
আজ শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার বাগানবাড়ি এলাকায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন রাজনীতিতে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে জাতীয় নির্বাচনে এর বিন্দুমাত্র প্রভাবও পড়বে না। মতলবে এসে এ ধরনের বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি। তাই ঢাকাতেও এ রকম বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্পের আয়োজন করব।’
স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাক হানাদার বাহিনী নিরীহ মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালায়, তখন আওয়ামী লীগ পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মেজর জিয়াউর রহমান কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র দখল করে দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধের আহ্বান জানান, তখন থেকেই মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান যদি দেশে এসে ৩১ দফা বাস্তবায়নের সুযোগ পান, তাহলে বাংলাদেশকে এমন একটি রাষ্ট্রে রূপান্তর করবেন যেখানে ধনী-গরিব, জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে সবাই নাগরিক সেবার আওতায় আসবে। তারেক রহমান প্রত্যেক প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য হেলথ কার্ড চালুর ঘোষণা দিয়েছেন, যার মাধ্যমে মানুষ বিনা মূল্যে ভালো চিকিৎসা পাবে।’
আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক বলেন, ‘১৭ বছরে আওয়ামী লীগ দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, প্রায় ৩০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নামে দেশে-বিদেশে ৮০০ বাড়ি পাওয়া গেছে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর ড্যাব সভাপতি প্রফেসর ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম বলেন, ‘আমি যদি দলের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হয়ে এলাকার উন্নয়নের সুযোগ পাই। তাহলে বৃহত্তর মতলবের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে বাংলাদেশের মডেল করব।
উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে হেলথ সেন্টারগুলোতে শতভাগ চিকিৎসক নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি মতলবে একটি টেকনিক্যাল কলেজ ও নার্সিং কলেজ স্থাপন করব, ইনশাআল্লাহ্। এই মতলবে কোনো মাদক কারবারি, চাঁদাবাজ, বালুখোর বা ভূমিদস্যুর ঠাঁই হবে না। মতলব হবে আধুনিক ও নিরাপদ উপজেলা।’
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বশির আহাম্মদ খান, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সদস্য অ্যাডভোকেট এসএম মফিজুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রনেতা ইঞ্জিনিয়ার জাকির হোসেন প্রমুখ।
সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী জামাল উদ্দিনের পরিচালনায় বিনা মূল্যে এই স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্পে ২০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা এলাকার ৮ শতাধিক অসহায় মানুষকে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ প্রদান করা হয়।
এমআর/টিকে