জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক চর্চা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
আজ শনিবার (১৮ অক্টোবর) জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারতের পর তিনি এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের এই সমাধি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঠিকানা এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের ভিত্তিমূল। আমরা এই দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্র সুসংহত করার জন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে চাই, আর তার চর্চা শুরু হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে সবচেয়ে যেটা বেশি জরুরি তা হচ্ছে, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চা অব্যাহত রাখা; যার যাত্রা শুরু হয়েছে গতকাল জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে। এটার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোতে গণতান্ত্রিক সংস্কারের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সমাজ, রাষ্ট্র, সরকার বিনির্মাণ হবে। তার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের সব অঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা হবে। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার মানবাধিকারসহ সব মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন এবং ভোগ করা সম্ভব হবে।
আমরা সে জন্য নতুন যাত্রা শুরু করেছি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা সবাইকে আহ্বান জানাই, ধৈর্য, সহনশীলতা, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়ে যেন আমরা এগিয়ে যাই। তাহলে আমরা সত্যিকার অর্থে একটি কার্যকর শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ করতে পারব। আমাদের শহিদদের আত্মত্যাগ এবং রক্তদান সফল হবে।
গতকাল অনেক রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেনি, এর ফলে আগামী নির্বাচনে কোনো প্রভাব পড়বে কি না— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার জানা মতে এনসিপি এবং তিনটি কি চারটি বাম রাজনৈতিক দল স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যেতে পারেনি। আমি বলব না স্বাক্ষর করেনি, স্বাক্ষর করার সুযোগ উন্মুক্ত আছে। আশা করি, তারা ভবিষ্যতে সনদে স্বাক্ষর করবেন। এতে করে আমাদের আগামী নির্বাচনে বড় কোনো প্রভাব পড়বে না। আমরা মনে করি, সহনশীলতা সবার মধ্যে আসবে, হয়তো তাদের কিছু দাবি-দাওয়া আছে, সেটা সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবে।
একপর্যায়ে তারাও জুলাই সনদ স্বাক্ষর করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আর গণতন্ত্রের মধ্যে তো সবাই একমত হবে এমন তো নয়। সেটা উন্মুক্ত আছে ভিন্নমত থাকতেই পারে।
জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের বিষয়ে তিনি বলেন, জুলাই যোদ্ধা নামে একটি সংগঠন আমাদের সঙ্গেও কথা বলেছিল, ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গেও কথা বলেছে। তাদের একটা যৌক্তিক দাবি ছিল, সেই যৌক্তিক দাবিটা পূরণের জন্য আমি নিজেও স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম, কথা বলেছিলাম। সেটা ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ সঠিকভাবে সংশোধন করেছেন। এরপর তাদের অসন্তুষ্ট থাকার কথা নয়। যেসব বিশৃঙ্খলা হয়েছে, আমরা খোঁজ নিয়েছি, এটা তদন্তাধীন আছে।
তিনি আরো বলেন, গতকালের ঘটনায় দেখা গেছে, জুলাই যোদ্ধাদের নামে কিছুসংখ্যক ছাত্র নামধারী উচ্ছৃঙ্খল লোক ঢুকেছে। সেটা ফ্যাসিস্ট সরকারের ফ্যাসিস্ট বাহিনী বলে আমি মনে করি এবং আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বাহিনী যে এখনো সব জায়গায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, সেটা গতকালকে দৃশ্যমান হয়েছে। এখানে কোনো জুলাই যোদ্ধা, জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত কোনো সংগঠন অথবা কোনো ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে না।
আইকে/টিএ