রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘রাজনীতির স্বার্থে যেহেতু তারা (এনসিপি) জামায়াতের বিরুদ্ধে নিজেকে প্রকাশ করেছেই, আক্রমণ সম্ভবত বন্ধ করবে না। সেটা তার রাজনীতির কারণেই সে করবে। তখন জামায়াতকে হয়তো প্রতিক্রিয়া দেখাতে হবে। তবে আমি ধারণা করি, এই ধরনের বালখিল্য কোট-আনকোট তারা আর করবেন না।’
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) তার ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেলে এক ভিডিওতে এমন মন্তব্য করেন।
জামায়াতের এই সাম্প্রতিক অবস্থানের কারণ নিয়ে তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল, বিশেষ করে ছাত্রশিবিরের। সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনগুলোর রেজাল্ট তাদের মাথা নষ্ট করে দিয়েছে। যদিও চাকসু, রাকসুতে ভালো করবেন, এটা পারসেপশন ছিল।
ফলে তারা এখন ধরাকে সরাজ্ঞান করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এটা ভীষণ ভুল একটা সিদ্ধান্ত।’
এনসিপি নেতাদের বিষয়ে তিনি বলেন, এই তরুণরা গণ-ভুত্থানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এবং তাদের যে বয়স আছে, সেই বয়সে তারা পাল্লা দেওয়ার ক্ষেত্রে খুবই অ্যাগ্রেসিভ হয়ে উঠবেন। এটা খুবই প্রেডিক্টেবল।
এই জেন-জি প্রজন্মটা বেড়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে। সুতরাং সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা ক্রমাগত থাকেন, ওখানে কী বলতে হবে, কী লিখতে হবে, এটা তাদের খুব ভালো জানা আছে এবং সেটা তারা প্র্যাকটিসও করেন।
নাহিদ ইসলামের স্ট্যাটাস সম্পর্কে জামায়াতের মন্তব্য নিয়ে ডা. জাহেদ বলেন, ‘আমি মনে করি জামায়াত প্রাথমিক যে স্টেটমেন্ট দিয়েছিল সেটাই যথেষ্ট ছিল। ইভেন এটা আরো ফর্মাল হতে পারত। পুরনো দল হিসেবে তাদের আরো বেশি টলারেন্স দেখানো দরকার ছিল।
তবে নাহিদ ইসলাম যদিও মারাত্মক অভিযোগ করেছেন, কিন্তু কোনো বিদ্রুপাত্মক শব্দ ব্যবহার করেননি। কিন্তু জামায়াতের স্টেটমেন্টে তারা খোঁচা দিয়েছেন, বিদ্রুপ করেছেন। ফলে প্রতিক্রিয়া যা হওয়ার তা-ই হয়েছে।’
ডা. জাহেদ বলেন, ‘আমি ধারণা করি, জামায়াত ভবিষ্যতে আর খুব বেশি আলাপ (বিতর্ক) করবে না। কারণ তাদের থলের বেড়াল বেরোবে। তারা দীর্ঘ সময় ইন্টারেক্ট করেছে। একে অপরকে যার যার সুবিধায় ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে। এনসিপি চেয়েছে তার জনবলটা ব্যবহার করে তাকে নিজেদের শুরু থেকেই বেশ বড় দল হিসেবে দেখানো। আর জামায়াত মনে করেছে, তার সামনে এই ফেসগুলো রাখতে পারলে সে সেটাকে ব্যবহার করবে।’
তিনি বলেন, ‘কনফ্লিক্ট যত বাড়বে তখন তথ্য আরো বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। বিশেষ করে এনসিপির তরুণদের মধ্যে সবাই যে খুবই পলিটিক্যালি যে ধরনের ম্যাচিউরড আচরণ করার কথা ততটা করবেন, তা না। তাদের কেউ কেউ আছেন, তারা তাদের পলিটিক্যাল ম্যাচিউরিটি অতটা নয়। ফলে অনেক কথা বেরিয়ে যেতে পারে। তাই আমি ধারণা করি, জামায়াত অত্যন্ত ডিজাস্টার একটা ভুল অলরেডি করে ফেলেছে। যদি সেটা তারা ফিল করে, সম্ভবত তারা এনসিপিকে আর এ ধরনের বাজে আক্রমণ করবে না।’
পিএ/এসএন