বর্তমান সময়ে ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া বিশাল সাহসের ব্যাপার বলে মন্তব্য করেছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ। কিশোরগঞ্জের সাবেক বিএনপি নেতা ও আইনজীবী ফয়জুল করিমের আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া নিয়ে এই মন্তব্য করেছেন তিনি।
নিজের ইউটিউব চ্যানেল ভয়েস বাংলায় দেওয়া এক ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, ‘বাপরে, সাহস বটে। এমন একটা সময়ে বিএনপির এক সাবেক নেতা আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিলেন প্রকাশ্যে! যখন আওয়ামী লীগ কোথায় লুকাবে, কোন গর্তে কত গভীরে; তা নিয়ে একটা রীতিমতো তোলপাড়, কেউ দেশ ছেড়ে ভেগে যাচ্ছে, কেউ দেশে থাকলেও অন্যত্র আশ্রয় নিয়ে আছে, কেউ একেবারে এমনভাবে গা ঢাকা দিয়েছে যে এক বছরে তার টিকিটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এরকম সময় ফয়জুল করিম আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার সাহস দেখিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি জানিনা ভদ্রলোক সুস্থ নাকি অসুস্থ। অথবা বলা যায় যে, কোনো কিছু কেয়ার করেন না, অসীম সাহসী একজন মানুষ। এটা খুবই ইন্টারেস্টিং।
এটা চিন্তাই করা যায় না। এরকম খবর আসতে পারে! বিশাল ব্যাপার। এই সময়ের রাজনীতিতে এটা অকল্পনীয় ব্যাপার। গতকাল বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক ভিডিওবার্তায় ফয়জুল করিম এই কথা জানান।
পরে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা ফেসবুকে তার দলের যোগদানের খবর প্রচার করেন।’
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘ফয়জুল করিম গত ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি সম্মেলনের আগের কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি কিশোরগঞ্জ সদর আসনের সাবেক এমপি এবং জিয়াউর রহমান সরকারের তৎকালীন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ফজলুল করিমের ছেলে।’
‘বিকেলে ফয়জুল করিম নিজে ফেসবুক আইডিতে এক ভিডিওবার্তায় আওয়ামী লীগে যোগদানের কথা ঘোষণা করেন।
অ্যাডভোকেট ফয়জুল করিম মুবিন নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে তিনি দুই মিনিট ১২ সেকেন্ডের লাইভে বক্তব্য দেন। সেখানে বলছেন— শেখ হাসিনা যেহেতু বলেছেন তিনি অবশ্যই দেশে ফিরবেন। আমি রাজনীতি করেছি দেশের জন্য, দলের জন্য নয়। এখন মনে করছি দেশের নেতৃত্বে শেখ হাসিনার প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন— বাংলাদেশের রাজনীতি এখন নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। শেখ হাসিনা শুধু আওয়ামী লীগের নয়, তিনি এই দেশের স্থিতিশীলতার প্রতীক। দেশ এবং জনগণের স্বার্থে এখন ঐক্যের সময়।’
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘ফয়লুল করিম কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির উপদপ্তর সম্পাদক, পৌর বিএনপির সদস্য এবং জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামে কিশোরগঞ্জ শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপির সম্মেলনে আগের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ এখনো চলমান। দল বদলের কারণ জানতে চাইলে ফজলুল করিম বলেন— আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দল, ধর্মনিরপেক্ষ দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব। ৫ আগস্টের পর মানুষের যে স্বপ্ন ছিল, চেতনা ছিল, এক বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু রাষ্ট্র সংস্কারের নামে সম্পদ ভোগ করার চেষ্টা চলছে। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে ক্ষমতায় বসানোর চেষ্টা চলছে। তাকে প্রতিহত করার জন্যই আমি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছি। আমি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।’
আইকে/এসএন