আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে একটি জোট গঠিত হতে পারে। এসব নতুন দল নিয়ে জোট গঠনের বিষয়ে আলোচনা চলছে, যদিও এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে আশা করছি, খুব শিগগিরই বিষয়টি স্পষ্টভাবে ঘোষণা করা হবে।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় ঝিনাইদহ শহরের আহার রেস্টুরেন্ট মিলনায়তনে জেলা এবি পার্টি আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আগেই গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের নির্যাতন চালানো হয়। আমাদের অফিসে হামলা হয়েছে, নেতাকর্মীদের কারাগারে নেওয়া হয়েছে, অনেকেই সেই গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
তিনি বলেন, জনগণ ও গণতন্ত্রের বিজয় নিশ্চিত হয়েছে। ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ডা. মিলন ও নূর হোসেন জীবন দিয়ে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তেমনি জুলাই অভ্যুত্থানে জনগণ স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে হটিয়ে নতুন বাংলাদেশ গঠনের পথ তৈরি করেছে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, সেই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এখনো পূরণ হয়নি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর জনগণের যে প্রত্যাশা ছিল, তা নানা বিশৃঙ্খলার কারণে এখন হুমকির মুখে।
মঞ্জু আরও বলেন, হাসিনার শাসনামলে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করা হয়েছে। দেশের অর্থ লুটপাট করে কানাডা ও মালয়েশিয়ায় বেগম পাড়া তৈরি করা হয়েছে। গুম-খুনের ভয়াল রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকার। সেই কারণেই আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা আজ দেশ থেকে বিতাড়িত। জনগণ তাদের আর চায় না।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা দেখছি, এই সরকার তিনটি রাজনৈতিক দলকে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে। বর্তমানে দুটি বড় দল ও একটি অনিবন্ধিত দল এ সুবিধা ভোগ করছে। তাদের বিশৃঙ্খলার কারণেই দুর্নীতি, দখলবাণিজ্য, পদায়ন ও বদলি বাণিজ্য এখনো বন্ধ হয়নি। গণঅভ্যুত্থানের লক্ষ্য ছিল রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা, কিন্তু তা এখনো সম্ভব হয়নি। এভাবে চলতে থাকলে আসন্ন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে কিনা, তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত।
মতবিনিময় সভায় জেলার গণমাধ্যমকর্মীসহ এবি পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা এবি পার্টির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান, সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় যুব পার্টির সদস্য সচিব ও ঝিনাইদহ-২ আসনে দলীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী হাদিউজ্জামান খোকন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বিমল সাহা, এম. রায়হান, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম. রবিউল ইসলাম রবি, এবি পার্টির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়ামিনুর রহমান, ঝিনাইদহ-১ আসনে এবি পার্টির এমপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান, ঝিনাইদহ-৩ আসনের প্রার্থী মুফতি মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
পরে মতবিনিময় সভায় ঝিনাইদহ জেলার তিনটি আসনে এবি পার্টির মনোনীত প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
টিজে/টিকে