বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে ইসলামী আদর্শভিত্তিক বাংলাদেশ। তিনি দাবি করেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সব ইসলামী ও গণতন্ত্রকামী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে যৌথভাবে লড়াই করবে।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা আমীর অধ্যাপক মো. রমজান আলীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা নাজমুল ইসলামের পরিচালনায় সদস্য (রুকন) সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন জেলার নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ আজিজুল হক, সাবেক আমীর মাওলানা তৈয়্যবুজ্জামান, আবদুস সালামসহ জেলার ৬টি সংসদীয় আসনের মনোনীত এম পি প্রার্থী নেতৃবৃন্দ। সম্মেলনে কিশোরগঞ্জ জেলার সাত শতাধিক রুকন (নারী-পুরুষ) উপস্থিত ছিলেন।
মতিউর রহমান আকন্দ আরও বলেন, একটি দল নতুন বক্তব্য দিচ্ছে- জামায়াত যদি ক্ষমতায় যায় তাহলে আওয়ামী লীগ ফিরে আসার সম্ভাবনা আছে। উনারা রাজনীতির চালে এতো বড় ভুল করবেন এটাতো ভাবতেও অবাক লাগে। কারণ যেই আওয়ামী লীগ আল্লামা সাঈদীকে ৪৮দিন রিমান্ডে রেখে তার অবস্থান থেকে টলাতে পারলো না, আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করার আগে তার পরিবারের মাধ্যমে জামায়াত নেতৃবৃন্দের কাছে বিভিন্নভাবে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। জামায়াতকে প্রস্তাব দিয়ে বলা হয়েছিল যে, আপনারা যদি বিএনপির সাথে ঐক্যবদ্ধ হওয়া থেকে বিরত থাকেন; তাহলে আপনাদের ফাঁসি হবে না, কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করবেন। এই ধরনের প্রলোভন পাওয়ার পরেও যে সংগঠন, যে সংগঠনের নেতারা নতি স্বীকার করলো না, হাসতে হাসতে ফাঁসির মঞ্চে গেল, সেই জামায়াত আওয়ামী লীগের মত একটি ফ্যাসিস্ট, খুনি ও স্বৈরাচারের সাথে হাত মেলাবে তা পাগলেও বিশ্বাস করবে না। জেনে রাখুন, জামায়াত কখনই এটা (আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত) করবে না বরং আপনারাই করবেন।
তিনি বলেন, জামায়াতের জনপ্রিয়তা এত বেড়েছে যে, ক্ষমতায় যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তাই জামায়াতকে ঠেকানোর জন্য আপনাদের আরেকটি শক্তি দরকার। আপনাদের বক্তব্য ও কথাবার্তায় এটা স্পষ্ট প্রতীয়মান যে, সেই শক্তি হল পতিত স্বৈরাচার (আওয়ামী লীগ)। আমরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলতে চাই, আওয়ামী লীগের মত খুনী ফ্যাসিস্ট দলকে বাংলাদেশের মাটিতে পুনর্বাসিত করার দুঃসাহস দেখাবেন না। যদি তা হয়- আপনাদেরকেও স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের ভাগ্যবরণ করতে হবে। কারণ বাংলাদেশের মানুষ আজন্ম ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে, সেকুলারিজমের বিরুদ্ধে। দেশবাসী আশা করে আপনারা জনআকাক্সক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে শুভবুদ্ধির পরিচয় দিবেন। তা-না হলে আপনাদের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হতে হবে।
মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ডাকসু, জাকসু, চাকসু ও রাকসুতে ছাত্রশিবিরের নিরঙ্কুশ ও ভূমিধস বিজয়ে আপানারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। আপনারা বুঝতে পেরেছেন এই নির্বাচনগুলোর প্রভাব জাতীয় নির্বাচনেও পড়বে। সেই আতঙ্ক থেকেই আপনারা বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রদানের অপকৗেশল গ্রহণ করেছেন এবং বলছেন যে, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে পড়বে না। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রভাব জাতীয় নির্বাচনে পড়বে কিনা তা আপনারা না জানলেও দেশবাসী ভাল করেই জানেন যে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে জনগণ জামায়াতে ইসলামীসহ দেশপ্রেমিক বাংলাদেশপন্থি ইসলামী দলগুলোকে ব্যাপকভাবে ভোট প্রদান করে বিজয়ী করবে ইনশাআল্লাহ।
ইএ/টিকে