এশিয়া কাপ শেষ হয়েছে প্রায় এক মাস আগে। কিন্তু ট্রফিকে ঘিরে শুরু হওয়া নাটক যেন থামছেই না। ভারতীয় মিডিয়ার দাবি অনুযায়ী সর্বশেষ তথ্য, দুবাইয়ে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সদর দপ্তর থেকে এশিয়া কাপের ট্রফি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আবুধাবির একটি অজ্ঞাত স্থানে। তারা বলছে, ট্রফিটি বর্তমানে এসিসি সভাপতি ও পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভির হেফাজতে রয়েছে।
মূলত, সবকিছুর সূচনা হয় গত মাসের ২৮ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল থেকে। ৫ উইকেটে শিরোপা জয়ের পর ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের দল নাকভির কাছ থেকে ট্রফি নিতে অস্বীকৃতি জানায়। কারণ, নাকভি শুধু এসিসির সভাপতি ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যানই নন, তিনি পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও।
ভারতের অভিযোগ, এপ্রিলে জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পেছনে নাকভির প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল, যা দু’দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে। সেই কারণেই ভারতের খেলোয়াড়রা তার কাছ থেকে ট্রফি নিতে চাননি। ফলে ম্যাচ-পরবর্তী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বিলম্বিত হয় প্রায় দেড় ঘণ্টা।
পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়লে নাকভির নির্দেশে ট্রফিটি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে সরিয়ে নেয়া হয় এবং দুবাইয়ে এসিসির সদর দপ্তরে রাখা হয়। কিন্তু এর পরেও ঝামেলার শেষ হয়নি। নাকভি পরে শর্ত দেন, ট্রফি নিতে হলে ভারতীয় দলের কোনো সদস্যকে এসিসির অফিসে এসে সেটি নিতে হবে।
ফাইনালের দু’দিন পর এসিসির এক মুলতবি বৈঠকে ট্রফি ইস্যু নিয়ে আলোচনা হলেও কোনো সমাধান আসেনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, নাকভি ব্যক্তিগতভাবে বিসিসিআই কর্মকর্তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন, তবে তিনি এক্স (টুইটার)-এ পোস্ট দিয়ে সেটি অস্বীকার করেন।
এ মাসের শুরুতে নাকভি আবারও প্রস্তাব দেন, ২০২৫ সালের এশিয়া কাপের ট্রফি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তরের জন্য একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজনের। যেখানে ভারতীয় অধিনায়ক ও বিসিসিআই প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
তবে বিসিসিআই জানায়, তারা কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছাড়াই ট্রফি গ্রহণ করতে চায়। কিন্তু নাকভি তাতে রাজি নন। তার অবস্থান, ভারতীয় দলের কোনো খেলোয়াড়কেই সরাসরি এসে ট্রফিটি নিতে হবে।
সর্বশেষ ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, সম্প্রতি এক বিসিসিআই কর্মকর্তা দুবাইয়ে এসিসি দপ্তরে গিয়ে দেখেন, ট্রফিটি আর সেখানে নেই। এসিসির কর্মীরা জানান, ট্রফিটি সরিয়ে নেয়া হয়েছে আবুধাবিতে এবং এর সঠিক অবস্থান শুধুমাত্র নাকভি জানেন। এই ঘটনার পর বিসিসিআই বিষয়টি আগামী আইসিসি বৈঠকে (৪-৭ নভেম্বর, দুবাই) তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
এসএস/টিএ