সৌদি আরবের মদিনা চেম্বার অব কমার্সের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানা গেছে, অঞ্চলের পর্যটকদের প্রায় তিন-চতুর্থাংশই মদিনাকে প্রথম গন্তব্য হিসেবে বেছে নিচ্ছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পর্যটকরা এই শহরকে প্রধান গন্তব্য হিসেবে নির্বাচনের মূল কারণ হলো এর আধ্যাত্মিক গুরুত্ব এবং নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর সাথে গভীর ঐতিহাসিক সম্পর্ক। ৭৩.৭ শতাংশ দর্শক মদিনা সফরের জন্য আগ্রহী।
বিশ্বব্যাপী পর্যটন সূচকে মদিনা শীর্ষ ১০০ গন্তব্যের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে এবং মোট পর্যটন কার্যকারিতা সূচকে সপ্তম অবস্থান দখল করেছে। এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, মদিনা শুধু আধ্যাত্মিক শহরই নয়, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকেও পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আগত পর্যটকদের ৪৭.২ শতাংশ আল উলা গভর্নরেট সফর করেছেন, যেখানে রয়েছে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান, সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা। অন্যদিকে, দেশীয় পর্যটকদের ১৪.১ শতাংশ ইয়ানবু গভর্নরেট বেছে নিয়েছেন এর সুন্দর সৈকত, সামুদ্রিক বিনোদন এবং পরিবার-বান্ধব পরিবেশের জন্য।
মদিনা চেম্বার অব কমার্স জানিয়েছে, এসব সূচকই মদিনা অঞ্চলের পর্যটন খাতের দ্রুত বৃদ্ধির প্রতিফলন। জাতীয় পর্যটন ব্যবস্থার সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে গন্তব্য উন্নয়ন এবং সৌদি আরবকে বৈশ্বিক পর্যটন মানচিত্রে আরও দৃঢ় অবস্থানে স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে। এটি সৌদি ভিশন ২০৩০-এর লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
প্রতিবেদনে মদিনা রিজিয়ন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির কার্যক্রমকেও প্রশংসা করা হয়েছে, যারা পর্যটন ও উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন।
তায়েফের বাসিন্দা আহমদ আল-ওতাইবি, যিনি রিয়াদে কর্মরত, আরব নিউজকে বলেন, মদিনা সবসময় আমাদের হৃদয়ের কাছের শহর। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ, সবসময় মানুষের আগমন, সব মিলিয়ে মদিনার কোনো তুলনা নেই।
তিনি মদিনা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির অবকাঠামো উন্নয়ন ও সেবা বৃদ্ধির কাজের প্রশংসা করেন, যা ধর্মীয় পর্যটন এবং আতিথেয়তা খাতের মান উন্নত করেছে। এর ফলে পর্যটকরা সুবিধা পাচ্ছেন, পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনমানও উন্নত হচ্ছে।
২০২৫ সালের প্রথমার্ধে সৌদি আরবের অন্যান্য শহরের তুলনায় মদিনার হসপিটালিটি সুবিধার হার সর্বোচ্চ ৭৪.৭ শতাংশে পৌঁছেছে। শহরের লাইসেন্সপ্রাপ্ত হসপিটালিটি প্রতিষ্ঠানও বৃদ্ধি পেয়েছে। মোট প্রতিষ্ঠান ৫৩৮টি, যার মধ্যে নতুন ৬৯টি। মোট হোটেল কক্ষের সংখ্যা ৬৪,৫৬৯, এর মধ্যে নতুন যোগ হয়েছে ৬,৬২৮ কক্ষ।
এই সব উন্নয়ন কার্যক্রমই মদিনাকে ধর্মীয় পর্যটনের অন্যতম প্রধান গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছে এবং শহরের আতিথেয়তা ও সেবা মান বৃদ্ধির মাধ্যমে সৌদি ভিশন ২০৩০-এর লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহায়ক হচ্ছে।
সূত্র : আরব নিউজ
আরপি/টিএ