পশ্চিমা প্রভাবের কারণেই আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি। তিনি বলেন, “দেশের জনগণের শেখ হাসিনার প্রতি ক্ষোভ ছিল, সেই সঙ্গে পশ্চিমাদের মাস্টারপ্ল্যানের সঙ্গে ভারতও যুক্ত ছিল। এমনকি ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-ও এর সঙ্গে জড়িত ছিল। আর সে কারণেই হাসিনার পতন সহজ হয়েছিল।
সম্প্রতি গোলাম মাওলা রনি তিনতন্ত্রে এসব কথা বলেন।
রনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার পতনের পর প্রথম ৬০ দিন দিল্লি অনেকটা নিরপেক্ষ অবস্থানে ছিল। ভারতের রাষ্ট্রদূত যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে চেয়েছিলেন। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্পর্ক ভালো ছিল।
তবে দুই মাসের মাথায় সেই অবস্থান পুরোপুরি বদলে যায়।’
রনি দাবি করেন, আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘ, ন্যাটো এমনকি পাকিস্তান ও চীন যাদের সঙ্গে শেখ হাসিনার সম্পর্ক অতটা ঘনিষ্ঠ ছিল না তারা সবাই নতুন সরকারকে সমর্থন দিয়েছে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে ‘নতুন বাংলাদেশ’ গঠনের ক্ষেত্রে তারা পরামর্শ, অর্থ ও কূটনৈতিক সহায়তা দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশ সফর করেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কক্সবাজারও গিয়েছিলেন।
বাংলাদেশে মানবাধিকার কমিশনের সরাসরি একটি অফিস চালু হয়েছে। আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকও নতুন সরকারকে প্রাথমিকভাবে সহযোগিতা করতে এগিয়ে এসেছিল।’
গোলাম মাওলা রনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আমলে পশ্চিমারা বাংলাদেশকে ‘বটমলেস বাস্কেট’ উপাধি দিয়েছিল। বর্তমান সরকারের আমলেও দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে সেই অবস্থার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। গত ১০ মাসে নতুন করে ৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ বেড়েছে, ৩০ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছে, অসংখ্য গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।
এতে পশ্চিমারা নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করলে স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকারকে যেসব দেশ প্রথমে সহায়তা করতে চেয়েছিল, তারা এখন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আর আওয়ামী লীগের পতনে পশ্চিমাদের যে উল্লাস ছিল, এখন সেটিই বুমেরাং হয়ে গেছে।’
এমকে/টিকে