বিশ্বজুড়ে বহু তারকা স্বাধীনভাবে নিজেদের ধর্ম পালন করেন। তবে মাঝে মাঝে শোনা যায় কিছু তারকার ধর্মান্তরের খবর। কেউ প্রেমের টানে, কেউ আত্মিক প্রশান্তি খুঁজে নতুন বিশ্বাস গ্রহণ করেন। বলিউড এবং বিশ্ব সঙ্গীত অঙ্গনের কিছু তারকার গল্প এই প্রেক্ষাপটে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
প্রখ্যাত সুরস্রষ্টা এ আর রহমান জন্মেছিলেন হিন্দু পরিবারে, তাঁর নাম ছিল আর এস দীলিপ কুমার। ২২ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি হিন্দু ধর্মের অনুসারী ছিলেন। অল্প বয়সে বাবাকে হারানোর পর পরিবার অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে। তাঁর মা ছিলেন পীর করিমোল্লা শাহ কাদদীর শিষ্য। ১৯৮৪ সালে যখন রহমানের ছোট বোন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন, সাহায্যের জন্য তিনি পীর করিমোল্লার কাছে যান। সেই সময় থেকে ধীরে ধীরে তার জীবনে পরিবর্তন আসে এবং ১৯৮৯ সালে পুরো পরিবার ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে।
বলিউডের চিরচেনা জুটি ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনীও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। হেমা মালিনী ধর্মেন্দ্রকে বিয়ে করতে চাইলেও ধর্মের বাধার কারণে প্রথমে সমস্যা ছিল। হিন্দু বিধান অনুযায়ী, জীবিত স্ত্রী থাকলে দ্বিতীয় বিয়ে করা যায় না। তাই নতুন জীবন শুরু করতে উভয়েই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
শর্মিলা ঠাকুর ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক নবাব মনসুর আলি খান পতৌদির সঙ্গে প্রেমের কারণে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তাঁদের সন্তান সাইফ আলি খানও মুসলিম ধর্মের অনুসারী। শর্মিলার পুত্রবধূ অমৃতা সিং মূলত শিখ ধর্মের অনুসারী ছিলেন, কিন্তু সাইফ আলি খানের সঙ্গে বিবাহের জন্য তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। যদিও তাঁদের বিবাহিত জীবন ১৩ বছর পর শেষ হয়, অমৃতা এখনও ইসলাম ধর্ম পালন করছেন।
জনপ্রিয় অভিনেত্রী আয়েশা টাকিয়া মুসলিম প্রেমিক ফারহান আজমিরের সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেমের পর ২০০৯ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের আগে আয়েশা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তাদের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে, যার নাম মিকাইল আজমি।
পপ সঙ্গীতের কিংবদন্তি মাইকেল জ্যাকসনও মৃত্যুর কিছুদিন আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। মুসলিম হওয়ার পর তার নাম রাখা হয় মিখাইল। ধারণা করা হয়, প্রযোজক ও গীতিকার ডেভিড ওয়ালশ পাই এবং ফিলিপ বলের অনুপ্রেরণায় তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। তারা মনে করতেন, ইসলাম ধর্ম জ্যাকসনকে একজন ভালো মানুষ হতে সাহায্য করবে।
মানুষ বিভিন্ন কারণে ধর্ম পরিবর্তন করে। কেউ প্রেমের টানে, কেউ আত্মিক শান্তি খুঁজে নতুন বিশ্বাস গ্রহণ করেন। বলিউড ও বিশ্ব সঙ্গীত অঙ্গনের তারকারাও এই ধারাবাহিকতায় পিছিয়ে নেই। তাদের এই যাত্রা শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং অনেকের কাছে আত্মিক ও সামাজিক উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এমকে/এসএন