নীল-সবুজ চোখের অধিকারী বলিউড অভিনেত্রী ঐশ্বরিয়া রায়কে ‘সৌন্দর্যের দেবী’ বললে ভুল হবে না। সম্প্রতি ৫২তম জন্মদিন উদ্যাপন করেছেন তিনি। তবে এখনো রূপের ঝলকানিতে কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ে রাজত্ব করছেন এ নায়িকা।
১৯৯৪ সালে বিশ্ব সুন্দরীর আন্তর্জাতিক খেতাব জেতেন। এরপরই শোবিজ দুনিয়ার নজড়কাড়া কাজ দিয়ে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হন বলিউডের এ তারকা।
মিস ওয়ার্ল্ড মুকুট জয়ের পর অসাধারণ সৌন্দর্য আর অভিনয় দক্ষতা দিয়ে মণি রত্নমের তামিল ছবি ‘ইরুভার’ দিয়ে সিনেমা জগতে পা রাখেন ঐশ্বরিয়া। এরপর শুধুই সফলতার গল্প। একই বছর তিনি ববি দেওলের বিপরীতে ‘অউর প্যায়ার হো গায়া’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে হিন্দি ছবির দুনিয়ায় পা রাখেন।
সঞ্জয় লীলা বানসালি ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ ঐশ্বরিয়ার ক্যারিয়ারে গুরুত্বপূর্ণ মোড় এনে দেয়। সিনেমাটি তাকে সেরা অভিনেত্রীর ফিল্মফেয়ার পুরস্কারও এনে দেয়। ফিল্মফেয়ারের একটি সাক্ষাৎকারে নির্মাতা বানসালি বললেন ঐশ্বরিয়া প্রসঙ্গে বলেন,
ওর চোখে কিছু একটা আছে। এটাই ওর সৌন্দর্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক। ওরা ‘স্বাভাবিক’ নয়। চোখ দুটি এতটাই শক্তিশালী যে সংলাপ না থাকলেও স্ক্রিনে অ্যাশকে আবেগপ্রবণ মনে হয়।
সুভাষ ঘাইয়ের গ্র্যান্ড মিউজিক্যাল সিনেমা ‘তাল’ সিনেমা ঐশ্বরিয়াকে নিয়ে যায় অনন্য উচ্চতায়। এরপর থেকেই ঐশ্বরিয়া ধারাবাহিকভাবে দর্শকদের উপহার দেন ‘জোশ’, ‘হামারা দিল আপকে পাস হ্যায়’, ‘মোহাব্বতে’, ‘রাজ’, ‘উমরাও জান’, ‘যোধা আকবর’, ‘রেইনকোট’, ‘গুজারিশ’, ‘ধুম ২’র মতো সফল সিনেমা।
এরপর ২০০২ সালে সঞ্জয় লীলা বানসালির ‘দেবদাস’-এ অভিনয় করে হইচই ফেলে দেন। বক্স অফিসে প্রচুর ব্যবসা করার পাশাপাশি সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী আইকনিক সিনেমা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। কান চলচ্চিত্র উৎসবে এটি প্রদর্শিত হয় এবং টাইম ম্যাগাজিন ‘সহস্রাব্দের সেরা ১০টি চলচ্চিত্র’ তালিকায় স্থান পায়। এটি অস্কারে ভারতের প্রতিনিধিত্বও করে। ১০টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করে ‘দেবদাস’। এ সিনেমা দিয়েই ঐশ্বরিয়া ফেয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন।
বলিউডের পাশাপাশি সাউথ ইন্ডিয়া, কলকাতার বাংলা ছবি ও হলিউডের ইংরেজি ছবিতেও অভিনয় দক্ষতার ঝলক দেখিয়েছেন অ্যাশ সুন্দরী। হিন্দি ছবির বাইরে মার্টিন হেন্ডারসনের বিপরীতে ব্রিটিশ ছবি ‘প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস’, রজনীকান্তের বিপরীদে তামিল ছবি ‘রোবট’ ও ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত বাংলা ছবি ‘চোখের বালি’র মতো সিনেমা অভিনেত্রীর ক্যারিয়ারের অনন্য মাইলফলক।
২০০৭ সালে মণি রত্নমের ‘গুরু’ সিনেমায় অভিষেক বচ্চনের বিপরীতে অভিনয় করতে গিয়ে প্রেমে পড়েন সম্পর্কে জড়ান অভিনেত্রী। সে বছরই তারা বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন। এক মেয়ে আরাধ্যকে নিয়ে তাদের সুখের সংসার। যদিও মাঝে একাধিকবার তাদের বিচ্ছেদের গুঞ্জন উঠছে।
মেয়েকে বড় করার জন্য সফল ক্যারিয়ারে পাঁচ বছরের বিরতি নেন। ২০১৫ বড় পর্দায় কামব্যাক করেন ‘জাজবা’ ছবির মাধ্যমে। এরপর বিরতি দিয়ে দিয়ে ‘সরবজিত’, ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’, বেলজিয়ান চলচ্চিত্র ‘এভরিবডিস ফেমাস!’, ‘ফ্যানি খান’, ‘পুন্নেইন সিলভান ১ ও ২’ সিনেমাগুলোতে অভিনয় করেন।
বর্তমানে অভিনয়ে ব্যস্ততা কম থাকলেও বিভিন্ন ব্যান্ডের মডেল হিসেবে ও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রের বড় বড় ইভেন্টে ঐশ্বরিয়ার উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।
আরপি/এসএন