প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জিতে ইতিহাস গড়েছেন ভারতের মেয়েরা। তবে ইতিহাস গড়ার আগে ভারতের ‘গলার কাঁটা’ হয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক। বিশ্বের প্রথম ব্যাটার হিসেবে সেমিফাইনালের পর ফাইনালে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়ে প্রোটিয়াদের জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন লরা উলভার্ট। উলভার্টকে আউট করতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন রেনুকা সিং-দীপ্তি শর্মারা।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনারকে কোনোভাবেই বশে আনতে পারছিল না ভারত। ব্যক্তিগত ১০১ রানের সময় একটা সুযোগ পেল ভারত। দীপ্তির অফস্পিনকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিলেন প্রোটিয়া ব্যাটার। সেই ক্যাচ তিনবারের প্রচেষ্টায় ধরেন ফিল্ডার আমানজোত কৌর।
আমানজোতের ক্যাচ ধরার প্রচেষ্টায় একটা বিষয় খুবই পরিষ্কার ছিল যেকোনো উপায়ে হোক বল তালুবন্দি করতে হবেই। শেষ পর্যন্ত তালুবন্দিও করেছেন ২৫ বছর বয়সী অলরাউন্ডার। আর সেটাই ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের টার্নিং পয়েন্ট। হার না মানার যে এই মানসিকতা—এর পেছনের মূল কারিগর হলেন আমানজোতের দাদি ভগবন্তী কৌর।
আমানজোতের এই পর্যায়ে আসার ভিত্তি তার দাদিই। সেই দাদিই এক মাস ধরে অসুস্থ, কিন্তু জানেন না তিনি। আসলে বিশ্বকাপ চলার সময় যেন তার মনোবল না ভাঙে সেই চাওয়াই ছিল তার পরিবারের। ক্রিকেটাদের পেছনে এমন হাজারো সেক্রিফাইস রয়েছে পরিবারের।
মেয়েদের বিশ্বকাপ জয় নিশ্চিত হওয়ার পর আমানজোতের দাদির অসুস্থতার খবর প্রকাশ্যে এনেছেন তার বাবা ভুপেন্দর সিং। তিনি বলেছেন, ‘আমার মা ভগবন্তী, আমানজোতের শক্তির ভিত্তি ছিল। যেদিন থেকে সে মোহালির ফেজ ফাইভের বাসার আশপাশের পার্ক এবং রাস্তায় ক্রিকেট খেলা শুরু করে। আমি যখন কাঠের দোকানে যেতাম তখন প্রতিবেশী ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে খেলত সে। মা তখন সঙ্গেই থাকতেন। গত মাসে তিনি হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন। আমানজোতকে আমরা জানাইনি। তার চিকিৎসার জন্য কয়েক দিন ধরে হাসপাতালে সময় কাটাচ্ছি। এমন কঠিন সময়ে বিশ্বকাপ জয় নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য স্বস্তির।’
মা সুস্থ হলে নাতনি আমানজোতের সঙ্গে আনন্দ উপভোগ করবেন বলে জানান ভূপেন্দর, ‘আমানজোতের পাড় সমর্থক ছিলেন আমার মা। একবার সে সুস্থ হলে নিশ্চিতভাবেই আমানজোতের প্রতি ভালোবাসা আরো বেড়ে যাবে এবং জয় উদযাপন করা হবে।’
দাদির অসুস্থতার সংবাদ শোনার পর আমানজোত বলেছেন, ‘ফাইনাল দেখতে দলের সবাই পরিবার এসেছে মুম্বাইয়ে। আমার পরিবারের সবাই বাড়িতে টেলিভিশনেই খেলা দেখেছে। ঠাকুমার শরীর ভালো নেই। তাই ওরা কেউ আসতে পারেননি।’
আইকে/ টিএ