জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে কৌশলগত অবস্থানে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে বিএনপি। দলটি বেশ কয়েকজন সম্ভাব্য প্রার্থীকে মনোনয়ন না দিয়ে তাদেরকে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র পদে মনোযোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিএনপি তৃণমূল পর্যায়ে সাংগঠনিক কাঠামো আরও শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ কয়েকটি বড় শহরের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ইতোমধ্যেই দলের অভ্যন্তরীণ আলোচনায় উঠে এসেছে।
বিএনপির শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, দল এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে সাংগঠনিক পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে কৌশলগতভাবে বিবেচনা করছে। এজন্য অভিজ্ঞ, জনপ্রিয় ও মাঠে সক্রিয় নেতাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে বিএনপির সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়ালের নাম আলোচনায় রয়েছে।
ব্যবসায়ী পরিবার থেকে আসা এই তরুণ রাজনীতিক ২০১৫ ও ২০২০ সালের দুই দফা সিটি নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। তাবিথ আউয়াল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহসভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন এবং দলের তরুণ নেতৃত্বের প্রতিনিধিত্ব করছেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন আফরোজা আব্বাস, যিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সভাপতি। 
সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন এবং দক্ষিণ সিটিতে দলের নারী সংগঠনকে সক্রিয় ও সংগঠিত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র পদে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচনায় রয়েছেন ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ও দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। 
পেশায় চিকিৎসক ডা. শাহাদাত ১৯৯০-এর দশকে ছাত্রদল ও যুবদলের রাজনীতি থেকে উঠে আসেন। মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় উপস্থিতি এবং সংগঠনের প্রতি নিবেদনের কারণে তিনি চট্টগ্রামে দলীয়ভাবে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন।
সিলেট সিটিতে দলের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি ২০১৩ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। 
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এই নেতা শহরের উন্নয়ন ও গণমানুষের ইস্যুতে সরব ছিলেন। ২০২৩ সালের নির্বাচনে তিনি অংশ নেননি, তবে স্থানীয় রাজনীতিতে এখনও দলের প্রভাবশালী মুখ হিসেবে সক্রিয় রয়েছেন।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে রাজশাহী, খুলনা, ময়মনসিংহ, গাজীপুর, রংপুর, নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীদের নাম জানা যায়নি।
দলীয় সূত্র বলছে, স্থানীয় পর্যায়ের মতামত ও সাংগঠনিক যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করার পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে। 
ইএ/টিকে