রাষ্ট্রচিন্তক ও কবি ফরহাদ মজহার বলেছেন, দেশে যদি নির্বাচন হয়, তবে ক্ষমতা ভারতের কাছেই থাকবে।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফরহাদ মজহার বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর ছাত্র-তরুণরা বিপ্লবী সরকার গঠন না করে ভুল করেছে। এর ফলেই দেশে নির্বাচনের মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান হবে- এমন ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন হলে আন্তর্জাতিক মহল হাততালি দেবে, ক্ষমতা থাকবে ভারতের হাতে।
তিনি বলেন, তরুণরা এখনো পর্যন্ত একটি পত্রিকাও বের করতে পারেনি। কীভাবে তারা বিপ্লব করবে? ভারত শেখ হাসিনাকে নিয়ে বসে আছে। যে কোনো মুহূর্তে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। আমরা এখন একটি অবৈধ সরকারের অধীনে আছি, যার কোনো এখতিয়ার নেই ঐকমত্য কমিশন বা অন্য কোনো কমিশন গঠনের। শেখ হাসিনার সংবিধানে যদি আপনি শপথ করেন, তাহলে এটার রক্ষা আপনাকে করতে হবে। এটাকে আপনি পরিবর্তন করতে পারবেন না। সংস্কার করতে পারবেন না।
ফরহাদ মজহার বলেন, রাষ্ট্র কোনো তামাশার বিষয় নয়। যদি সংবিধান রাখতে চান, তবে ঐকমত্য কমিশন কেন? আর যদি সংবিধান পরিবর্তন করতে চান, তবে সেটি স্পষ্টভাবে ঘোষণা করতে হবে। পাঁচ তারিখে সংবিধান বাতিল করে নতুন প্রক্রিয়া শুরু হলে এই সব ফালতু কথা বলার প্রয়োজন হতো না। কারণ কর্ম পরিষদে যেটাই আপনি আলোচনা করতেন, যে সিদ্ধান্ত নিতেন, ওটাই তো হয়ে যেতে নতুন গঠনতন্ত্র।
তিনি আরও বলেন, কিছু কিছু ছোট ছোট কনসেপ্ট বা ধারণা খুব গুরুত্বপূর্ণ। চিন্তাকে পরিবর্তন করা যায়। প্রথমটা হলো গণ সার্বভৌমত্ব। যখনই কোনো গণঅভ্যুত্থান হয় ,তখন যেটা কায়েম করতে হয়, এটাকে বলে গণ সার্বভৌমত্ব। জনগণের হাতে ক্ষমতা দেওয়া। গঠনতন্ত্র মানে কি রাষ্ট্রের হাতে ক্ষমতা? আমরা রাষ্ট্র বিশ্বাস করি না। রাষ্ট্রের ক্ষমতা মানে আমলার ক্ষমতা, রাষ্ট্রের ক্ষমতা মানে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা। রাষ্ট্র ক্ষমতা পুলিশের ক্ষমতা। কিন্তু এখন জনগণ নিজেরা নিজেদের হাতে ক্ষমতা চায়। যাতে জনগণ সরাসরি যে কোনো রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং অংশগ্রহণ করতে পারে। সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সে নিজে অংশগ্রহণ করতে পারে।
আরপি/ টিকে