বিনিয়োগ আনতে চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন: নৌপরিবহন উপদেষ্টা

আধুনিকায়ন ও বিনিয়োগ আনতে চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

আজ শনিবার (৮ নভেম্বর) সকালে পাবনায় নগরবাড়ি আধুনিক নদীবন্দর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সামনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘যাদের ব্যক্তিস্বার্থে আঘাত লাগে তারা বলেন আমরা বিদেশিদের চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দিচ্ছি। কিভাবে দিয়ে দিচ্ছি? গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন সেক্টরে বিদেশি কম্পানি নেই? বিশ্বের অনেক দেশেই বন্দর বিদেশি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয়।

এক্ষেত্রে তারা আরো বেশি লাভবান হচ্ছেন। আমাদের চট্টগ্রাম বন্দরটি এখনও ওরকম মডার্ন (আধুনিক) নয়। মডার্নাইজেশন (আধুনিকায়ন) করতে গেলে বিদেশি ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। এটা ছাড়া কার্যক্রম ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে না।

নগরবাড়ি নদীবন্দর সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, ‘এই বন্দরের সুফল এখানকার ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে পেতে শুরু করেছেন। ভবিষ্যতে আরো সুযোগ হলে এখানে কন্টেইনার হ্যান্ডেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। সেটিও আমরা পরিকল্পনায় রেখেছি। এছাড়া আমরা চারটি ড্রেজার মেশিন পেয়েছি।

নাব্যতা সংকট নিরসনের জন্য এর একটি এখানে দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে মাঝারি আধুনিক একটি পোর্ট (বন্দর) হিসেবে এটিকে গড়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে।’

বিআইডাব্লিউটিএ-এর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব দেলোয়ার বেগম।

এছাড়া নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় ও বিআইডাব্লিউটিএ-এর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও স্থানীয় শীর্ষ ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

বিআইডাব্লিউটিএ-এর তথ্যমতে, নগরবাড়ী ঘাট নদীপথে সার, সিমেন্ট, কয়লাসহ ভারী পণ্য পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।

২০১৮ সালে এই ঘাটকে আধুনিক নৌবন্দরে রূপান্তর করার কাজ শুরু হয়। ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতা ও মামলার কারণে দুই দফা মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর পর এর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলো। ৩৬ একর জমির ওপর নির্মিত এই বন্দরে রয়েছে ৩৬০ মিটার কংক্রিটের জেটি, টার্মিনাল, ওয়্যারহাউজ, গুদাম, ওপেন শেড ও দ্রুত পণ্য ওঠানো-নামানোর সুবিধা। ক্রেন ও পাকা জেটির ব্যবহারে পণ্য খালাসের গতি বেড়েছে ১০ গুণ, যা রাজস্ব আয় ও কর্মসংস্থান বাড়বে। আগে প্রতিদিন দুই হাজার টন পণ্য খালাস হলেও এখন প্রায় ২০ হাজার টন পণ্য খালাস করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ব্যবসায়ী ও শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগে এই ঘাটে সনাতন পদ্ধতিতে মালামাল ওঠানো-নামানো, পরিবহন ও সংরক্ষণ করা হতো। ফলে আমদানি কাজে তেমন গতি ছিল না। তবে এখন চিত্র বদলেছে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে নিজেদের জাহাজে করে নগরবাড়ি ঘাটে সরাসরি পণ্য নিয়ে আসা যাবে এবং এখান থেকে তা সড়কপথে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে সহজে পরিবহন করা যাবে। এর আগে আমদানি পণ্যের একটি বড় অংশ দক্ষিণের জেলাগুলোতে খালাস করা হতো। ফলে উত্তরাঞ্চলে পরিবহনে সময়ের সঙ্গে ট্রাকপ্রতি আট থেকে ১০ হাজার টাকা বাড়তি খরচ গুণতে হতো। এছাড়া ঘাটে পণ্য খালাসে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও এখন সেসব থাকবে না। 

টিএম/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
শেষ মুহূর্তে বড় চমক সিলেট টাইটান্সের Dec 25, 2025
img
বড়দিনে প্রতিহিংসা পরিহার করে ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ার আহ্বান জাতীয় যুবশক্তির Dec 25, 2025
img
মাছির কারণে কয়েক কোটি টাকার মালিক হলেন যুবক Dec 25, 2025
img
তারেক রহমানকে বহনকারী ফ্লাইট পরিচালনায় ৩ পাইলটের পরিচয় Dec 25, 2025
img
স্বদেশে ফিরছেন তারেক রহমান, কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীতে বিমানবন্দর Dec 25, 2025
img
নৌপরিবহন উপদেষ্টার সঙ্গে পাকিস্তানের হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ Dec 25, 2025
img
ভারতের অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের মানচিত্রে সংযুক্ত করতে চায় বেইজিং Dec 25, 2025
img
তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে ঢাকায় আসার পথে প্রাণ গেল কৃষকদল নেতার Dec 25, 2025
img
তাসকিনদের ৬ উইকেটে হারিয়ে প্লে-অফে মুস্তাফিজের দল Dec 25, 2025
img
নরসিংদী-৩ আসনে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন পেলেন মনজুর এলাহী Dec 25, 2025
img
তারেক রহমানের সঙ্গে দেশে ফিরছে ‘জেবু’ও Dec 25, 2025
img
বাংলাদেশি কিশোরীর টানে চাঁদপুর এসে পুলিশ হেফাজতে চীনা নাগরিক Dec 25, 2025
img
দেশে ফেরার আগে লন্ডনের বাসার সামনে সপরিবারে তারেক রহমান Dec 25, 2025
img
সিলেটে এক ঘণ্টা যাত্রা বিরতি দিবেন তারেক রহমান, কড়া নিরাপত্তা Dec 25, 2025
img
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ Dec 25, 2025
img

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

সমঝোতা হলেও এনসিপি প্রার্থীরা শাপলা কলি প্রতীকে নির্বাচন করবেন Dec 25, 2025
img
জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় মান্নার ঋণ পুনঃতফসিল বাতিল করলো ইসলামী ব্যাংক Dec 25, 2025
img

হাদি হত্যা

ফয়সালের স্ত্রী, বান্ধবী, শ্যালকের দায় স্বীকার Dec 25, 2025
img
নতুন দায়িত্ব পেলেন আলী রীয়াজ Dec 25, 2025
img
দেশের পথে তারেক রহমান Dec 25, 2025