বিএনপির মধ্যে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ঢুকে পড়েছে। তারা দলে বিভাজন সৃষ্টি করছে। সম্প্রতি জাতীয় নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণার পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ এবং ঝাড়ু মিছিলসহ তারা অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনের বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী এসব কথা বলেন।
এর আগে কুমিল্লার লাকসামের মুদাফরগঞ্জে আনছারিয়া কমপ্লেক্সে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন তিনি।
ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী বলেন, ওই স্বার্থান্বেষী মহল দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করছে। অচিরেই দেশনেতা তারেক রহমান দেশে ফিরবেন এবং ঘোষিত মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, লাকসাম-মনোহরগঞ্জের বিএনপির নেতাকর্মীরা দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে নির্যাতিত। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের কাছে আমাদের প্রার্থী পরাজিত হয়েছিলেন দলেরই একাংশের বেইমানির কারণে। ব্যক্তিস্বার্থে পরিচালিত সেই মহলের কারণেই বহু নেতাকর্মী হামলা-মামলাসহ নানা হয়রানির শিকার হয়েছেন। এমনকি সাবেক সংসদ সদস্য ও তৎকালীন লাকসাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম হিরু ও লাকসাম পৌর বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন কবির পারভেজকে গুম হতে হয়েছে। তাই সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ওই বেইমান ব্যক্তিকে আর দলে দেখতে চায় না।
বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভা ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী বলেন, গত ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগের অত্যাচার, নির্যাতন, হামলা ও মামলায় জর্জরিত ছিল লাকসাম-মনোহরগঞ্জের জনপদ। তবুও আমরা সবসময় নেতাকর্মীদের পাশে থেকেছি। যে কোনো আন্দোলন, সভা-সমাবেশ বা নির্বাচনে আর্থিক ও শারীরিকভাবে সহযোগিতা করেছি। উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের জন্য শ্রম ও অর্থ খরচ করেছি।
৫ আগস্টের পর আমরা লক্ষ্য করেছি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটিতে ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাদের পরিবর্তে অনেক জায়গায় আওয়ামী লীগের অনুসারীরা আশ্রয়-প্রশ্রয় পেয়েছেন। এতে দলীয় ত্যাগী কর্মীরা অবমূল্যায়িত হয়েছেন। যা ফলে দলে বিভাজন ও গ্রুপিংয়ের জন্ম দিয়েছে। বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্বদিয়ে দেখার জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানে প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন এই নেতা।
তিনি বলেন, আমার নেতা তারেক রহমান সবসময় বলেছেন সৎ, যোগ্য ও জনপ্রিয় প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। আমি সংস্কার, আবিষ্কার বা বহিষ্কারের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই। আমি নিরবচ্ছিন্নভাবে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বিশ্বাস করি, দল আমাকে অবমূল্যায়ন করবে না। আমাকে যদি লাকসাম-মনোহরগঞ্জ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়, তাহলে ইনশাআল্লাহ এই আসনে কোনো গ্রুপিং বা কোন্দল থাকবে না। দল আরও সুসংগঠিত ও শক্তিশালী হবে।
এসময় লাকসাম উপজেলা বিএনপি নেতা খোরশেদ আলম খুসরু, এ কে এম আতিকুর রহমান লিটন, ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর হোসেন শিপন, মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মো. আলাউদ্দিন, লাকসাম উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সাইদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাইন উদ্দিন সাকিব, নওয়াব ফয়েজুন্নেছা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি নাছির উদ্দিন সোহেল, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস মজুমদারসহ লাকসাম-মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলসহ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কেএন/টিকে