বিএনপি নিজেরাই গোল খেয়ে এখন বেদনা নিয়ে ঘুরছে : আখতার

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, জুলাই সনদ স্বাক্ষর না করার কারণে এনসিপি রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাবে বলে যারা বক্তব্য দিয়েছেন তারাই এখন বলছেন ঐকমত্য কমিশন নাকি ফাউল খেলে হাত দিয়ে গোল দিয়েছে। অথচ বিষয়টি এমন হওয়ার কথা ছিল না। কথা ছিল এনসিপি-বিএনপি, জামায়াতসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষ মিলে পুরোনো যে ব্যবস্থা বা পুরোনো যে দল তাদের গোল দেব। কিন্তু বিএনপি ওই পুরোনো দলে যোগ দিয়ে নিজেরা গোল খাওয়ার বেদনা নিয়ে এখন ঘুরছে। অথচ এটা হওয়ার কথা ছিল না। এই নতুন বাংলাদেশকে আমরা সবাই মিলে নতুন করে গড়ব বলে সবার প্রত্যাশা ছিল।

রোববার (৯ নভেম্বর) রাতে সুপ্রিম কোর্ট বার অডিটোরিয়ামে ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পথরেখা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সমর্থিত ন্যাশনাল ল’ইয়ার্স অ্যালায়েন্সের (এনএলএ) নবযাত্রা উপলক্ষ্যে এ সভার আয়োজন করা হয়।

জুলাই সনদ নিয়ে আখতার হোসেন বলেন, সুনির্দিষ্ট রূপরেখা উপস্থাপন না করার কারণে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেয়নি জাতীয় নাগরিক পার্টি। আমরা বারবার বলেছি যে, আলোচনার মধ্য দিয়েই এই সংকটের সমাধান হওয়া সম্ভব। কমিশনের সঙ্গে আবারও আলোচনায় বসেছিলাম। ফলে নিজেদের মেয়াদকালে সরকারের কাছে একটি সুপারিশ উপস্থাপন করেছে কমিশন।

তিনি বলেন, চব্বিশের অভ্যুত্থানের ফলে মানুষের প্রত্যাশা শুধু এতটুকুই ছিল না যে হাসিনার রেজিমকে উৎখাত করবে বা আগেকার মতো দেশটা চলতে থাকবে। কারণ মানুষ দেখে এসেছেন যে বাংলাদেশের সংকট যেমন, নেতৃত্ব বা ব্যবস্থারও সংকট তেমন। শুধু নেতৃত্বকে পরিবর্তন করে ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রেখে বাংলাদেশের গুণগত পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। আমরা জুলাই সনদের মধ্য দিয়ে সেই পুরোনো ব্যবস্থা থেকে পরিবর্তনের জন্য একটা জায়গা পর্যন্ত উত্তীর্ণ হতে পেরেছি। কিন্তু সবকিছু উৎখাত করতে পারিনি। এটা আমাদের সবার ব্যর্থতার জায়গা। কিন্তু যতটুকু অর্জন করেছি জুলাই সনদের মধ্য দিয়ে ততটুকুও যদি বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা না হয়, তাহলে এত মানুষের জীবন দেওয়া, রাজপথে আসা, রক্ত দেওয়া সবকিছুই গুড়েবালি পরিস্থিতি তৈরি হবে। আমরা এমনটা আর চাই না।

এনসিপির এ নেতা বলেন, সরকার গত সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করার জন্য এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছিল। সে সময় শেষ হওয়ার পথে। তবে এ সরকার তত্ত্বাবধায়ক নয়, একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেই দায়িত্বের জায়গাটা সরকার হয়ত ভুলে বসতে বসেছে। কেননা, তারা এখন শুধু নির্বাচন নির্বাচন করছে। নির্বাচন কীভাবে আয়োজন করা যেতে পারে এবং কীভাবে নির্বাচন দিয়ে নিজেরা দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেতে পারেন; সেই ধরনের একটা পথ খোঁজার চেষ্টায় তারা রয়েছেন। কিন্তু এ সরকার যখন গঠন করা হয় তখন আলাপটা এই জায়গায় ছিল না। এই সরকারের অন্যতম বড় কর্তব্যের জায়গা বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। যদি সংস্কারের বিষয়টাতে সরকারের তরফ থেকে কোনো ধরনের গাফিলতি দেখা যায় তাহলে সরকার যে নিজের ম্যান্ডেট থেকে চ্যুত হয়েছে তা জনগণের কাছে দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে উঠবে। তাই আমরা আহ্বান জানাব আপনারা যে ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় বসেছেন, সেই ম্যান্ডেটের অন্যথা আপনারা করবেন না।

ন্যাশনাল ল’ইয়ার্স অ্যালায়েন্সের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মুহা. এরশাদুল বারী খন্দকার ও যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূরের সঞ্চালনায় সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন এনসিপির আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসা ও এনএলএর মুখ্য সংগঠক অ্যাডভোকেট সাকিল আহমেদ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল ল’ইয়ার্স অ্যালায়েন্সের যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নাজমুস সাকিব। এতে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল ল’ইয়ার্স অ্যালায়েন্সের আহ্বায়ক এস এম আজমল হোসেন।

টিজে/এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
নরসিংদীতে ট্রাকচাপায় নারী নিহত Dec 27, 2025
img
তারেক রহমানের আজকের কর্মসূচি Dec 27, 2025
img
জেনে নিন নিয়মিত ওটস খেলে কী ঘটে শরীরে? Dec 27, 2025
img
বিশ্বমঞ্চে কে-পপের দাপট, বিলবোর্ড চার্টে শীর্ষে সেভেনটিন Dec 27, 2025
img
হাটহাজারীতে যুবলীগ নেতা আটক Dec 27, 2025
img
নাভিতে তেল ব্যবহারে কী উপকার? Dec 27, 2025
img
ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা আজ Dec 27, 2025
img
তারেক রহমানের কাছে প্রত্যাশা রাখলেন ‘আলো আসবেই’ অভিনেত্রী জ্যোতি Dec 27, 2025
img
ব্রেকফাস্ট না করেই লাঞ্চ? জেনে নিন কী হতে পারে এই অভ্যাসে Dec 27, 2025
img
হাদি হত্যার বিচারসহ ৩ দফা দাবিতে শাহবাগে রাতভর অবস্থান Dec 27, 2025
img
আজ খোলা হচ্ছে পাগলা মসজিদের সিন্দুক Dec 27, 2025
img
ফরিদপুরে জেমসের কনসার্টে হামলা-ভাঙচুর, আহত ২৫ Dec 27, 2025
img
৫৮ কোটি টাকা লোকসান নিয়ে জয়পুরহাট চিনিকলে আখ মাড়াই শুরু Dec 27, 2025
img
বড়দিনে কলকাতার সেলিব্রেশন মিস করছেন অমিতাভ বচ্চন Dec 27, 2025
img
শিলিগুড়ির দুই শতাধিক হোটেলে বাংলাদেশিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা Dec 27, 2025
img
বিচ্ছেদের পরেও বড়দিনে একসঙ্গে দুই ছেলেকে নিয়ে কোথায় গেলেন সুদীপ-পৃথা? Dec 27, 2025
১৯ বছর পর বাবার কবরের পাশে তারেক রহমান Dec 27, 2025
বিপিএলে সিলেট কে হা/রি/য়ে শুভ সূচনা রাজশাহীর Dec 27, 2025
‘জেলার ২’-এ কি ফিরছে রজনীকান্ত–শাহরুখ জুটি? Dec 27, 2025
ক্ষুধার বি/রু/দ্ধে ১১ কোটি টাকা অনুদানের ঘোষণা টেইলর সুইফটের Dec 27, 2025