তেহরানের শহরতলির নির্জন রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন একজন প্রৌঢ়। তিনি আত্মহত্যা করবেন বলে মনস্থির করেছেন। একটি চেরি গাছের নিচে তাকে সমাহিত করার কাজটি করতে পারে, এমন কাউকে খুঁজে ফিরছেন তিনি। 'টেস্ট অব চেরি' সিনেমার সেই অভিনেতা হোমায়ুন এরশাদি আর নেই। সিনেমাতে জীবনের রাস্তার দেখা পেলেও পার্থিব জগত থেকে তিনি এবার চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, ক্যান্সারের সঙ্গে দীর্ঘদিন লড়াইয়ের পর সোমবার (১১ নভেম্বর) মৃত্যু হয় স্থপতি থেকে অভিনেতা হয়ে ওঠা হোমায়ুন এরশাদির। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
১৯৪৭ সালের ২৬ মার্চ ইরানের ইসফাহানে জন্ম হোমায়ুন এরশাদির। বড় পর্দায় অভিনয়ের প্রথম সুযোগ পান আব্বাস কিয়ারোস্তামির পাম ডি’অর জয়ী সিনেমা 'টেস্ট অব চেরি'তে (১৯৯৭)। এই সুযোগটি তার কাছে আসে একদম কাকতালীয়ভাবে, তেহরানের সিগন্যালে গাড়ি থামানো অবস্থায় তার সঙ্গে কিয়ারোস্তামির দেখা হয়। এরপর বিখ্যাত ফিল্মনির্মাতা তার কাছে এসে বলেন, 'আমি একটা সিনেমা বানাতে চাই। আপনি কি অভিনয় করতে চান?'
ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর আশির দশকে এরশাদি ভ্যাঙ্কুভারে চলে যান। যেখানে তিনি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে একটি স্থাপত্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। পরবর্তীতে তিনি ইরানে ফিরে আসেন।
'টেস্ট অব চেরি' সিনেমায় অভিনয়ের পর এরশাদির জীবনের মোড় ঘুরে যায়। পরবর্তী প্রায় তিন দশকে তিনি ৯০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন মার্ক ফোর্স্টারের 'দ্য কাইট রানার' ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে।
অন্যান্য কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য– আলেহান্দ্রো আমেনাবারের 'আগোরা' (২০০৯), ক্যাথরিন বিগেলোর 'জিরো ডার্ক থার্টি' (২০১২) এবং হাসান নাজারের যুক্তরাজ্যভিত্তিক চলচ্চিত্র 'ইউটোপিয়া' (২০১৫)।
টেরেন্স মালিকের বহু প্রতীক্ষিত চলচ্চিত্র 'দ্য ওয়ে অব দ্য উইন্ড'-এ অভিনেতা হিসেবে থাকছেন হোমায়ুন এরশাদি, এমন একটা গুঞ্জন চলছিল। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য নিশ্চিত করা যায়নি।
এমআর/টিএ