ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দেশটির জ্বালানি খাতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তার মন্ত্রিসভার দুজন সদস্যকে বরখাস্ত করেছেন। বরখাস্ত হওয়া মন্ত্রীরা হলেন আইনমন্ত্রী হারম্যান হালুশোঙ্কো ও জ্বালানিমন্ত্রী ভিতলানা গ্রিনচুক।
তাদের বিরুদ্ধে অন্তত ১০ কোটি ডলার ঘুষ নেওয়া চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। দুই মন্ত্রী ছাড়াও জেলেনস্কি তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সাবেক ব্যবসায়িক অংশীদার তিমুর মিনদিচের বিরুদ্ধেও ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, পুরো ঘুষ চক্রের বিষয়টি সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন মিনদিচ।
দুর্নীতি নিয়ে জনরোষের বিষয়টি স্বীকার করে জেলেনস্কি বলেছেন, জ্বালানি খাতের সব কাজে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা থাকা উচিত। আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তাদের প্রতিটি তদন্তকে সমর্থন করি। আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে জবাবদিহির প্রতিশ্রুতি দিয়ে জেলেনস্কি আরও বলেন, এই মুহূর্তে বিদ্যুৎ- বিভ্রাট, রাশিয়ার হামলা ও ক্ষয়ক্ষতি মেনে নেওয়া ইউক্রেনের প্রতিটি নাগরিকের জন্য খুবই কঠিন বিষয়। এত কিছুর মধ্যে জ্বালানি খাতে কিছু দুর্নীতির ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এ ঘটনাকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের জন্য বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকট হিসেবে দেখা হচ্ছে। দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনকর্মী, বিরোধীদলীয় নেতা ও সাবেক সেনা কর্মকর্তারা জেলেনস্কির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, এই কষ্টকর কাজ হলেও নিজের ঘনিষ্ঠজনদের কারাগারে পাঠানো ও বরখাস্ত করার মতো বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এর আগে ইউক্রেনের রাষ্ট্রায়ত্ত পরমাণু শক্তি সংস্থা এনার্গোটমে ১৫ মাস ধরে তদন্ত করেছে দেশটির জাতীয় দুর্নীতি দমন ব্যুরো (নাবু)। প্রধান অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মিনদিচ, যিনি জেলেনস্কির গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ভারতাল৯৫- এর সহপ্রতিষ্ঠাতা।
তদন্তকারীরা কিয়েভে মিনদিচের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালানোর আগেই তিনি ইসরায়েলে পালিয়ে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি আগে জেলেনস্কির ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তবে কয়েকটি সূত্রের মতে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। বরখাস্ত হওয়া দুই মন্ত্রী গ্রিনচুক ও হারম্যান হালুশোঙ্কো তাদের বিরুদ্ধে ওঠা কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
কেএন/এসএন