শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (শাকসু) নির্বাচন আগামী ১৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী। তবে তার এ ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাত ৯টায় নিজ কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন তিনি।
উপাচার্য বলেন, ‘আমরা উৎসবমুখর পরিবেশে সব পক্ষকে নিয়ে নির্বাচন আয়োজন করব। আগামী ১৭ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সবকিছু মিলে এটি একটি চমৎকার তারিখ। কোনো অবস্থাতেই মারামারি করা যাবে না। না হলে আমরা বিকল্প চিন্তা করব। আর নির্বাচনের রোডম্যাপ নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করবে।’
এদিকে উপাচার্যের ঘোষিত তারিখ প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চান শিক্ষার্থীরা। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পরপরই উপাচার্যের কার্যালয়ের বাইরে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করছেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল হোসেন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ভিসি ও প্রো-ভিসি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল নির্বাচন হবে ৯ বা ১০ তারিখ। কিন্তু শুক্রবার ছাত্রদলের সঙ্গে মিটিং করে শীতকালীন ছুটির মধ্যে তারিখ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। তারা একটি পক্ষকে খুশি করে শাকসু নির্বাচন বানচালের আয়োজন করছে। আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি, যতক্ষণ না পর্যন্ত ১০ তারিখের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে ততক্ষণ আমরা ভিসি, প্রো-ভিসিকে অবরুদ্ধ করে রাখব।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক পলাশ বখতিয়ার বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের ঘোষিত নির্বাচনী তারিখ প্রত্যাখ্যান করলাম। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৯ বা ১০ ডিসেম্বর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই প্রশাসন প্রহসন করে অন্য তারিখ দিয়েছে। আমরা এটা মানি না। আন্দোলন চলবে।’
এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় শাকসু নিয়ে উপাচার্যের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সন্ধ্যায় হঠাৎ ‘অনিবার্য কারণ' দেখিয়ে সংবাদ সম্মেলন স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সংবাদ সম্মেলন স্থগিতের খবর ছড়িয়ে পড়লে রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। বিক্ষোভ মিছিল শেষে তালা দেন শিক্ষার্থীরা।
পরবর্তীতে মধ্যরাতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দীন চৌধুরী বিক্ষোভস্থলে পৌঁছে জানান, শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের কাছে ৯ ও ১০ ডিসেম্বর, এই দুটি তারিখ প্রস্তাব করা হবে। কমিশন যেটিকে উপযুক্ত বলে মনে করবে, সেটিই চূড়ান্ত নির্বাচনের দিন হিসেবে নির্ধারিত হবে। উপাচার্যের আশ্বাসের পর তালা খুলে দেন শিক্ষার্থীরা। তবে গতকাল আবারো ১০ তারিখের পরিবর্তে ১৭ ডিসেম্বর তারিখ ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও ভবনে তালা দেন তারা।