বলিউড অভিনেত্রী কারিশমা কাপুর ও প্রয়াত শিল্পপতি সঞ্জয় কাপুরের দাম্পত্য এবং চলমান আইনি জটিলতা নিয়ে মুখ খুলেছেন সঞ্জয়ের বোন মন্ধিরা কাপুর। তিনি দাবি করেছেন, সঞ্জয় ও কারিশমার বিচ্ছেদ তিক্ত হলেও তাদের বিবাহিত জীবন ছিল স্বাভাবিক। একইসঙ্গে কারিশমাকে নিজের ‘সবচেয়ে ভালো বন্ধু’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
সম্প্রতি দিল্লি হাই কোর্ট কারিশমার দুই সন্তান ও সঞ্জয়ের তৃতীয় স্ত্রী প্রিয়া সচদেভ কাপুরের মধ্যে চলমান মামলাকে ‘অতি নাটকীয়’ বলার পরেও বিতর্ক থামছে না। আর এই পরিস্থিতিতে মন্ধিরা ফের প্রিয়ার সমালোচনা করেন। মন্ধিরা বলেন, লোকজন নানা কথা বলছে—‘সঞ্জয় নারীলোভী ছিল।’ প্রথমত, সে আর নেই। তাকে সম্মান দিন। দ্বিতীয়ত, প্রিয়াসহ সবাই জানত সঞ্জয় কেমন মানুষ। সে কখনও নিজেকে আড়াল করেনি।
তিনি আরও বলেন, কারিশমার সঙ্গেও সঞ্জয় খারাপ ব্যবহার করেনি। হ্যাঁ, তাদের ডিভোর্সটা খারাপ হয়েছিল। সব ডিভোর্সই খারাপ। আমাকে একটা সুন্দর ডিভোর্স দেখান। আমিও খারাপ ডিভোর্সের ভেতর দিয়ে গেছি। মন্ধিরা জানান, তাদের পরিবার সব সময়ই একসঙ্গে থেকেছে, তিক্ততা থাকা সত্ত্বেও। তিনি কারিশমা প্রসঙ্গে বলেন, সে ছিল আমার সেরা বন্ধু। সে আমার বিয়ের পুরো সময়টা ছিলো। আমার হানিমুনের সময় কারিশমা ও সঞ্চয় কাছাকাছি আসে। আমরা সবসময় এক পরিবার ছিলাম।
ভারতীয় শিল্পপতি সঞ্জয় কাপুরের আকস্মিক মৃত্যুর পর তার বিপুল সম্পদের উত্তরাধিকার নিয়ে পরিবারে শুরু হয়েছে তীব্র আইনি লড়াই। প্রায় ৩০ হাজার কোটি রুপি মূল্যের সম্পত্তিকে কেন্দ্র করে বর্তমানে মুখোমুখি হয়েছেন সঞ্জয়ের তৃতীয় স্ত্রী প্রিয়া কাপুর, সাবেক স্ত্রী কারিশমা কাপুরের দুই সন্তান সামাইরা ও কিয়ান, এবং সঞ্জয়ের মা রানি কাপুর।
প্রিয়া সচদেভ সঞ্জয়ের পরিবার নিয়ে কটু কথা বলার জবাবে মন্দিরা বলেন, প্রিয়া আমাদের পরিবারক এনিয়ে মিথ্যা বলছে। আমার মা সবসময় নাতি-নাতনিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে, আমিও রাখি। এছাড়া তিনি স্পষ্ট জানান, প্রিয়ার আগের সংসারের মেয়ে সাফিরা সবসময় সৎ হিসেবেই থাকবে আর সঞ্জয়-কারিশমার সন্তান সামাইরা ও কিয়ানই সঞ্জয়ের উত্তরাধিকার পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান দাবি রাখে।
মন্ধিরা বলেন, আমরা কখনো অস্বীকার করি না যে আমার ভাই প্রিয়াকে ভালোবাসত। আমরাও তাকে পরিবারের মতোই দেখেছি। কিন্তু পরিবারের উপর অধিকার নেয়ার চেষ্টা করো না, যখন সামাইরা আছে। সবচেয়ে বড় অনুশোচনা হিসেবে তিনি জানান, প্রিয়াকে পরিবারে আনতে বাবাকে রাজি করানোই ছিল তার ভুল। তিনি বলেন, আমিই বাবাকে বলেছিলাম, ‘যদি সে সুখী থাকে, বিয়ে করতে দিন।’ এখন মনে হয় ভীষণ ভুল করেছি।
সঞ্জয়ের মৃত্যুর পর থেকে তার জীবন ‘রোলার-কোস্টার’-এর মতো হয়ে গেছে বলে জানান মন্ধিরা। তিনি বলেন, এখনও আমি তাকে হারানোর শোক কাটিয়ে উঠতে পারিনি। আদালতের লড়াই আর মাকে সামলাতেই সময় যাচ্ছে। মনে হয় আমরা এখনো মানতেই পারিনি যে সঞ্জয় নেই।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় শিল্পপতি সঞ্জয় কাপুর চলচতি বছরের জুনের মাঝামাঝি মারা মারা গেছেন। যুক্তরাজ্যে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে এই শিল্পপতির মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৫৩। পোলো খেলার সময় হার্ট অ্যাটাক হয় সঞ্জয়ের, এরপরই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন তিনি।
টিজে/টিকে