১০৪ বছরে প্রথমবার অ্যাশেজের কোনো টেস্ট মাত্র দুই দিনেই শেষ হয়ে গেল। ট্রাভিস হেডের দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডকে ৮ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে লিড নিলো অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু এই জয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) বড় অঙ্কের অর্থ হারিয়েছে। সেই লোকসানের পরিমাণ অন্তত ৩ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৪ কোটি টাকা। ফলে রোমাঞ্চকর অ্যাশেজের লড়াইয়ে এগিয়ে গেলেও ক্ষতিটা মানতে হচ্ছে স্বাগতিকদের।
অ্যাশেজের ইতিহাসে প্রথমবার প্রথম দিনেই ১৯টি উইকেট পড়ার নজির গড়ে পার্থ টেস্ট। সদ্য শেষ হওয়া টেস্টে বোলাররা কতটা রাজত্ব করছে, তা প্রথম বাক্যেই অনুমান করা যায়। দুই ইনিংসে যথাক্রমে ১৭২ ও ১৬৪ রানে গুটিয়ে গেছে ইংল্যান্ড। তবে অজিরা মাত্র ১৩২ রানে গুটিয়ে যাওয়ায় প্রথম ইনিংসের লিড মিলিয়ে ইংলিশদের পুঁজিটা দাঁড়ায় ২০৫ রানের। ট্রাভিস হেডের ৬৯ বলে রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরির সুবাদে স্রেফ ২৮.২ ওভারে ৮ উইকেটে জয় তুলে নেয় স্টিভেন স্মিথের দল।
পার্থে মাত্র দুই দিনেই প্রথম টেস্ট শেষ হয়ে যাওয়ায়, তৃতীয় দিনের টিকিট কাটা ৬০ হাজার দর্শকের মাথায় হাত। সেজন্য অবশ্য ম্যাচ শেষে ক্ষমা চেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সেঞ্চুরিয়ান ব্যাটার হেড, ‘আমি ৬০ হাজার দর্শকের জন্য কষ্ট পাচ্ছি, যারা কাল (তৃতীয় দিন) এখানে খেলা দেখার জন্য আসতে চেয়েছিলেন। আশা করি পরবর্তীতে আবারও এখানে হাউজফুল দেখা যাবে।’
অথচ মাত্র এক সপ্তাহ আগেও পূর্বাভাস দেওয়া হচ্ছিল- এবারের অ্যাশেজ ঘিরে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া বড় অঙ্কের অর্থ পকেটে পুরবে। সেই ভাবনায় বড় ধাক্কা লাগল সিরিজের শুরুতেই। কেবল তৃতীয় ও চতুর্থ দিনের হিসাবেই অস্ট্রেলিয়ার ৩ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে দেশটির সংবাদ সংস্থা এএপি। পার্থ টেস্টের প্রথম দিনে ৫১৫৩১ এবং পরদিন ৪৯৯৮৩ মিলিয়ে রেকর্ড ১ লাখ ১৫১৪ দর্শক খেলা দেখতে এসেছিলেন। যা ভেঙে দিয়েছে গত বছর পার্থে চার দিনে শেষ হওয়া অস্ট্রেলিয়া-ভারত টেস্টের রেকর্ড। সবমিলিয়ে সেখানে ৯৬৪৬৩ দর্শক ছিল।
গতকাল ম্যাচ শুরুর আগে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী টড গ্রিন মজা করে বলেছিলেন, ‘বড় সংখ্যক মানুষের জন্য বিষয়টা মেনে নেওয়া কঠিন। প্রথমত আমাদের সম্প্রচারকারী সংস্থা। আমাদের জন্য তো অবশ্যই, টিকিট বিক্রি, আমাদের সকল অংশীদার এবং স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের জন্যও। এই সিরিজে অর্থনীতির বড় প্রভাব রয়েছে।’ অর্থাৎ, প্রথম দিনেই ১৯ উইকেট পতনের পর ক্ষতির কথা আগেই আন্দাজ করতে পেরেছিলেন এই কর্মকর্তা। অথচ তৃতীয় দিনের সব টিকিটও নাকি বিক্রি হয়ে গিয়েছিল।
গত মাসে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভায় অজি ক্রিকেট বোর্ড ১১.৩ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার লোকসানের হিসাব দিয়েছিল। যা নিয়ে ক্রিকেট ভিক্টোরিয়ার প্রধান রস হেপবার্ন সমালোচনাও করেছিলেন। কারণ ওই বছর তারা ভারতের সঙ্গে লাভজনক একটি পাঁচ ম্যাচের সিরিজ খেলেছে। তবে লোকসানের পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে নতুন বছরে দর্শকদের বিশাল উপস্থিতি, ভিউয়ারশিপ ও স্পরশিপ পাওয়ার প্রত্যাশা জানিয়েছিলেন সিএ প্রধান মাইক বেয়ার্ড।
এসএস/টিকে