নন-এমপিও শিক্ষকদের প্রতি সরকারের উদাসীনতা লজ্জাজনক: রিজভী

নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলনে সরকারের উদাসীনতা লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষা আজ জাতির মেরুদণ্ড নয়, শিক্ষা এখন জাতির অসুস্থতা; সরকার ও প্রশাসনের উদাসীনতা দেখলে সেটাই মনে হয়।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সরকার প্রতিশ্রুত স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সচল সব নন-এপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে অবস্থানরত শিক্ষকদের প্রতি একাত্মতা জানাতে এসে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষিত মানুষরা আজ ফুটপাতে বসে অনশন করছেন। কিন্তু সরকার-প্রশাসনের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি করে আসছি। অথচ সেই সরকারের আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণেই শিক্ষকরা আজ অনাহারে জীবনযাপন করছেন। এটা শুধু সরকারের লজ্জা নয়, জাতির লজ্জা।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে সব রাজনৈতিক দল সমর্থন দিয়েছে। সব রাজনৈতিক দল মনে করেছে এই সরকারের অধীনে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। ড. ইউনূসের ওপরে সেই বিশ্বাস এখনো আছে। কিন্তু আপনার অন্যান্য উপদেষ্টারা জনগণের স্বার্থে, জনগণের চিন্তার সঙ্গে তালমিলিয়ে কাজ করছেন না। এটা কোনো কার্যকর সরকারের কাজ হতে পারে না।

গত সরকারের আমলে ভারতের একটি প্রাইভেট কোম্পানির সঙ্গে হওয়া বিদ্যুৎচুক্তির সমালোচনা করে রিজভী বলেন, এই চুক্তি পৃথিবীর কোথাও হয়নি। সবচেয়ে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে বাধ্য হয়েছে বাংলাদেশ। বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও বেসরকারি কোম্পানিকে দিতে হচ্ছে ক্যাপাসিটি চার্জ। আর নন-এমপিও শিক্ষকরা ফুটপাতে অনশন করেন। তাদের জন্য সরকারের কোনো টাকাই নেই। তাদের জন্য কোনো নীতিমালা তৈরি হয় না।

তিনি আরও বলেন, অর্থ উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি কখনো গরিব মানুষের পক্ষে থাকেননি। সরকার গরিব মানুষের জন্য হলেও এই সরকার গরিব মানুষের দিকে তাকায় না। বরং গরিব মানুষের ওপর কীভাবে স্টিমরোলার চালানো যায়, আজ আমি সেটির নমুনা দেখলাম। কত হাজার হাজার কোটি টাকা তো লোপাট হয়ে গেছে, শতশত কোটি টাকা এখন কয়েকজনের বাড়িতে খোঁজ করলেই তো পাওয়া যায়। সরকারও তো কতদিকে কত কাজে টাকা দিচ্ছে। তাহলে শিক্ষকদের জন্য টাকা খরচ করতে অসুবিধা কোথায়? কৃষি উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের ওপর ৮৩ শতাংশ কর বাড়ানো হয়েছে। এতে সারের দাম বাড়বে, কৃষক বিপর্যস্ত হবে। সরকার যে গরিববান্ধব নয়—এটাই তার প্রমাণ। 

রিজভী বলেন, আমলাতান্ত্রিক লালফিতার জটিলতা শিক্ষাখাতকে জর্জরিত করে রেখেছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বেসরকারি শিক্ষকরাও ভালো বেতন পান। কিন্তু বাংলাদেশে নন-এমপিও শিক্ষকরা বছরের পর বছর দাবি জানিয়ে এলেও কোনো সমাধান হয় না। তিনি অবিলম্বে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত করার দাবি জানিয়ে বলেন, শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া হোক। তারা মানুষ গড়েন, অথচ নিজেরাই অনাহারে অনশন করছেন—এটা জাতির জন্য লজ্জাকর।

ইউটি/টিএ



Share this news on:

সর্বশেষ

img
কোন সিনেমার মাধ্যমে সাফল্যের দেখা পান ধর্মেন্দ্র Nov 24, 2025
img
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ২ বছর পর মাঠে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী Nov 24, 2025
img
ধর্মেন্দ্রর যে রেকর্ড বলিউডে কেউ ছুঁতে পারেনি Nov 24, 2025
img
কিংবদন্তি ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুতে ভারতের রাষ্ট্রপতি থেকে সেলিব্রেটিরা কে কী বললেন Nov 24, 2025
img
‘রকি অউর রানি’তে ওঁর শেষকৃত্যের দৃশ্যের শুটিং করেছিলাম: চূর্ণী Nov 24, 2025
img
হয়তো বড় কোনো বিপদ আসন্ন, সে সম্পর্কে আমরা জানি না : আহমাদুল্লাহ Nov 24, 2025
img
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলে আগুন Nov 24, 2025
img
নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা হবে গুরুত্বপূর্ণ: নৌবাহিনী প্রধান Nov 24, 2025
ডাক্তার-আইনজীবীর মতো সাংবাদিকদেরও লাইসেন্স নিতে হবে: আখতার হোসেন Nov 24, 2025
img
গুগলে ঢাকায় ভূমিকম্পের সতর্কতা Nov 24, 2025
img

ইয়োনহাপের প্রতিবেদন

উত্তর-দক্ষিণ কোরিয়ার মাঝে যেকোনও সময় সংঘর্ষের আশঙ্কা Nov 24, 2025
img
রামায়ণ’-এর জন্য আমিষ ত্যাগ? রণবীরের সত্যতা নিয়ে বিতর্ক Nov 24, 2025
১৭ বছর পর তারেক রহমান; দেশে ফেরার প্রস্তুতি চূড়ান্ত Nov 24, 2025
img
ভূমিকম্প প্রস্তুতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার জরুরি বৈঠক Nov 24, 2025
img
দিলীপ কুমারের বাংলোতে 'অনুপ্রবেশ' করেছিলেন কলেজপড়ুয়া ধর্মেন্দ্র! Nov 24, 2025
img

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্বাচন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে Nov 24, 2025
img
জানা গেল ধর্মেন্দ্রর রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণ! Nov 24, 2025
যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনায় বড় অগ্রগতি Nov 24, 2025
img
নির্বাচনী প্রচারণায় জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের ব্যবহার নিষিদ্ধ Nov 24, 2025
img
মৃত্যুর আগে কি বলেছিলেন কিংবদন্তী এই অভিনেতা Nov 24, 2025