গণভোট অধ্যাদেশ-২০২৫ এর খসড়া নীতিমালা অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিশেষ বৈঠকে অধ্যাদেশটি চূড়ান্ত অনুমোদন পায়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় সূত্র জানায়, সকাল ১১টায় বৈঠক শুরু হয় এবং আলোচনার পর দুপুরেই অধ্যাদেশটি অনুমোদন দেওয়া হয়। বিকেল ৪টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণভোট অধ্যাদেশের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
সরকার গত জুলাই সনদের আলোকে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজনের ঘোষণা দেয়। এর অংশ হিসেবে আইনগত কাঠামো তৈরি করতে অধ্যাদেশ প্রণয়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে আনা হয়। গত ২০ নভেম্বর উপদেষ্টা পরিষদ গণভোট আইনের খসড়া অনুমোদন দেয়। আজকের বিশেষ বৈঠকে অধ্যাদেশ আকারে তার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হলো।
জুলাই সনদের ভিত্তিতে গণভোটের ব্যালটে উপস্থাপন করা হবে একটি মূল প্রশ্ন- ‘আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ- ২০২৫ এবং সনদে উল্লিখিত সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবগুলোর প্রতি সম্মতি প্রদান করছেন?’- যার উত্তর ভোটারদের ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ হিসেবে দিতে হবে।
গণভোটে চারটি মূল প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে-
ক. নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান জুলাই সনদে বর্ণিত প্রক্রিয়ায় গঠন করা।
খ. পরবর্তী সংসদকে দুই কক্ষবিশিষ্ট করা এবং দলীয় ভোটের অনুপাতে ১০০ সদস্যের উচ্চকক্ষ গঠন। সংবিধান সংশোধনে উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন বাধ্যতামূলক করা।
গ. নারী প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদসীমা নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণসহ জুলাই সনদের ৩০টি সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলোর বাধ্যবাধকতা।
ঘ. জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন।
এর আগে ১৩ নভেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস ঘোষণা দেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং একই দিনে গণভোটও অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সংস্কার বিষয়ে জনগণের মতামত সরাসরি জানতে এই গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
টিজে/টিএ