পটুয়াখালী-১ (সদর-মির্জাগঞ্জ-দুমকি) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেছেন, ‘ওনারা ব্যাংকার দিয়ে রাজনীতি করাবে, কন্ট্রাক্টর দিয়ে নির্বাচন করাবে। গণ অধিকারের ভিপি নূরকে দিয়ে নির্বাচন করাবে। তাকে দিয়ে শুধু নির্বাচনই করাবে না, তাকে টাকাও দেবে, কিন্তু নূর রাজি হয়নি। তখন তারা রুহুল আমিন হাওলাদারকে (জাতীয় পার্টি) ধরছে। তারা আমাকে হারাতে ১০০ কোটি টাকার বাজেট করেছে। কিন্তু রুহুল আমিন হাওলাদার কেমনে নির্বাচন করবে? তার বিরুদ্ধে তো অনেক মামলা, মার্ডার কেসও আছে -একটাতেও জামিন নেই, রেজাল্ট জিরো।’
চৌধুরী আরও বলেন, তবে এটা সত্য কথা, যারা বিএনপির দুর্দিনে সম্মুখ সারিতে ছিল, রক্ত দিয়েছে, ঘাম দিয়েছে, জেল খেটেছে, তাদের হাতেই নির্বাচন হবে ইনশাল্লাহ। তারপরেও যারা এখানে (জনসভায়) নাই তাদেরকে আপনাদের মাধ্যমে দাওয়াত করতেছি, আপনারা আসুন, আপনারা বিএনপির লোক, ধানের শীষের লোক। আপনাদের নিয়ে মিলেমিশে ইলেকশন করি, দলকে জিতিয়ে নিয়ে আসি, সরকার গঠন করি।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে পটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের বদরপুর শহীদ স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজিত এক নির্বাচনী জনসভায় আলতাফ হোসেন চৌধুরী এ কথা বলেন। যার একটি ভিডিও ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন ডাকেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান টোটন বলেন, তার (আলতাফ হোসেন চৌধুরী) কিছু বক্তব্য বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না, দায়িত্বশীল রাজনৈতিক আচরণের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। গত ২৬ নভেম্বর বদরপুর ইউনিয়নের এক জনসভায় তিনি জেলা বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘চোরা না শুনে ধর্মের কাহিনী’ এ ধরনের উক্তি জেলা বিএনপির নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের প্রতি কটুক্তির শামিল। একটি দলের মনোনীত প্রার্থী জনসম্মুখে এ ধরনের মন্তব্য করতে পারেন কিনা তা আমরা সংশ্লিষ্ট মহলের বিবেচনার জন্য রেখে দিচ্ছি।
তিনি আরও বলেছেন, তার সব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন এবং দায়িত্বশীল রাজনৈতিক বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন জেলা বিএনপি দুইভাগে বিভক্ত। বাস্তবে জেলা বিএনপি কখনো বিভক্ত ছিল না এবং এখনো নেই, ভবিষ্যতেও থাকবে না। আমরা সব সময় ধানের শীষের পক্ষে ছিলাম, আছি এবং থাকব ইনশাল্লাহ।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সভাপতি স্নেহাংশ সরকার কুট্টি বলেন, ওনার (আলতাফ হোসেন চৌধুরী) বয়স ৮৮ বছর, উনি অনেক সময় খেই হারিয়ে ফেলেন। অনেক কথা বলে ফেলেন দলের বিরুদ্ধে। দলের বিরুদ্ধে কেন? যেহেতু জেলা বিএনপি একটি নির্বাচিত বিএনপি পটুয়াখালীতে, সর্বজন স্বীকৃত। তার বিরুদ্ধে কথা বলাটাই সংগঠন বিরোধী। সমস্ত কথাই আমাদেরকে কেন্দ্রীয় অফিসে যাবে, আমি দৃষ্টি আকর্ষণ করব আমার মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির নেতাদের সবকিছু জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩ নভেম্বর বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭টি আসনের বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা করেন। যার মধ্যে পটুয়াখালী-১ আসনে ঘোষণা করা হয় আলতাফ হোসেন চৌধুরীর নাম। এরপর থেকেই তিনি পটুয়াখালীর বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনী কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
পিএ/এসএন