অবশেষে খুলছে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের দুয়ার। আজ সোমবার (১ ডিসেম্বর) থেকে পুনরায় চালু হচ্ছে কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল। একই সঙ্গে শুরু হচ্ছে রাত্রিযাপনের সুযোগ, যা বহাল থাকবে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।
এদিকে দেশের একমাত্র কোরাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের রিসোর্ট, খাবার হোটেলসহ দোকানপাটগুলোতে সংস্কারের ধুম পড়েছে। গাছ, বাঁশ ও ছন দিয়ে ইকোট্যুরিজম আদলে চলছে এসবের সংস্কার। পাশাপাশি ধোয়ামোছার কাজ চলছে টানা এক বছর ধরে পর্যটকবিহীন অবস্থায় পড়ে থাকা দ্বীপ ভ্রমণকারীদের বিনোদন স্পটগুলোতে। আগামী দুই মাস পর্যটকদের আতিথেয়তার প্রস্তুতি নিয়ে দ্বীপবাসী বলতে গেলে এখন অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছে।
সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, ১ ডিসেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে টানা দুই মাসের জন্য রাত যাপনের সুযোগ পাচ্ছে ভ্রমণকারীরা। নভেম্বর থেকে পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য সেন্ট মার্টিন উন্মুক্ত করা হলেও এ পর্যন্ত কোনো পর্যটক দ্বীপ ভ্রমণে যায়নি। আর ভ্রমণকারী না থাকায় পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলও বন্ধ রয়েছে। ভ্রমণের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও নভেম্বরজুড়ে (২৬ নভেম্বর পর্যন্ত) একজন পর্যটকও দ্বীপ ভ্রমণে না যাওয়ায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দ্বীপের পর্যটন আয়ের ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলো।
দ্বীপের বাসিন্দা এবং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার (ইউপি সদস্য) হাবিবুর রহমান গত বুধবার বিকেলে দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘হীরাঝিল নামে আমার একটি রিসোর্ট রয়েছে।
এটির আয় দিয়েই আমার পুরো বছরের সংসার চলে আসছিল। কিন্তু গেল বছর থেকে নিষেধাজ্ঞার কারণে এখন আমার পথে বসার অবস্থা।’
তিনি বলেন, আগে বছরে ছয় মাস ছিল পর্যটকের আনাগোনা। গত বছর থেকে মাত্র তিন মাসের জন্য দ্বীপ ভ্রমণের অনুমতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে দ্বীপবাসীর কপালে দুর্ভোগ নেমে এসেছে।
তিনি আরো জানান, অন্তত তিন মাসের জন্য দৈনিক দুই হাজার পর্যটকের রাত যাপনের অনুমতি থাকলে দ্বীপের পর্যটন ব্যবসায়ীরা কোনো রকমে জীবন ধারণ করতে পারতেন। সেন্ট মার্টিন দ্বীপের রিসোর্ট মালিক সমিতির কর্মকর্তা আবদুর রহিম জিহাদী বলেন, ‘দ্বীপে দুই শতাধিক ছোট-বড় রিসোর্ট রয়েছে। আগামী দুই মাসের জন্য ভ্রমণকারীদের সুবিধার্থে এসব রিসোর্টের সংস্কার দ্রুতগতিতে চলছে। ইকো-ট্যুরিজম আদলে কাজ করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাছ-বাঁশ, ছনসহ অন্যান্য নির্মাণসামগ্রী দ্বীপে আনতে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। এটি একটি ভালো সিদ্ধান্ত।’
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মৌলানা নুরুল আলম জানান, জেটিটির নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় জাহাজ ভিড়তে একটু সমস্যা হবে কি না তা নিয়েও দ্বীপবাসীর চিন্তার শেষ নেই।
পর্যটকবাহী জাহাজ মালিকদের সংগঠন ‘সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের’ সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানিয়েছেন, এবার কক্সবাজার শহর থেকে সেন্ট মার্টিন চলাচলের জন্য সাতটি পর্যটকবাহী জাহাজ প্রস্তুত রয়েছে। জাহাজগুলো হচ্ছে এমভি কর্ণফুলি এক্সপ্রেস, এমভি বারো আউলিয়া, এমভি বে ক্রুজ, এমভি কাজল, কেয়ারী সিন্দাবাদ, কেয়ারী ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন ও আটলান্টিক ক্রুজ।
এসএস/টিকে