আজ ১ ডিসেম্বর। শুরু হলো বিজয়ের মাস। বাঙালির গৌরব, অহংকার ও আত্মমর্যাদার মাস। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের মাধ্যমে বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয়ে গৌরবের অধ্যায় রচিত হয়। বিশ্বের মানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। এ মাসেই পূরণ হয় বাঙালি জাতির হাজার বছরের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বপ্নসাধ।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে বিজয়ী হয় বাঙালি জাতি। তত্কালীন পূর্ব বাংলার বাঙালিদের দীর্ঘদিনের স্বাধিকারের আন্দোলন চূড়ান্ত পরিণতি পায় ডিসেম্বর মাসে। বিশ্বের বুকে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয় বাংলাদেশ নামের এক নতুন স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র। ব্রিটিশদের কাছ থেকে ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা পাওয়ার পর ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি এ অঞ্চলের মানুষের।
শুরুটা হয়েছিল ভাষার অধিকারের দাবিতে। এরপর ক্রমাগত স্বাধীনতার দিকেই এগিয়ে চলা। ১৯৭১ সালের মার্চ ছিল বাংলাদেশের জন্মমুহূর্তের লগ্ন, বাংলাদেশের ইতিহাসের বাঁক পরিবর্তনের মুহূর্ত। বাংলাদেশের জন্ম ওই অগ্নিঝরা মার্চেই। অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এভাবেই ডিসেম্বর বাঙালির অনুভূতির সঙ্গে মিশে গেছে। ডিসেম্বর এলেই তাই আপনা আপনি উচ্চারিত হয় বিজয়।
ডিসেম্বর যেমন বিজয়ের মাস তেমিন বেদনাবিধুর এক শোকগাঁথার মাসও। এ মাসেই দেশের মেধাবী, শ্রেষ্ঠ সন্তান-বুদ্ধিজীবী হত্যার নৃশংস ঘটনা ঘটে। সমগ্র জাতিকে মেধাহীন করতে ১৪ই ডিসেম্বর দেশের অসংখ্য বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়। ১৬ই ডিসেম্বর ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। আর এই আত্মসমর্পণের মধ্যদিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। এদেশের মানুষ পায় স্বপ্নের স্বাধীন ভূখণ্ড। লাল সবুজের একটি পতাকা।