ইসলামিক বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান ও তার প্রাক্তন স্ত্রী সাবিকুন নাহারের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে গত ২১ অক্টোবর। এই বিচ্ছেদের মাস খানেক পরেই তারা ফের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন সাবিকুন নাহার নিজেই।
আবু ত্বহার সঙ্গে আলাদা হয়ে ফের কিভাবে একসঙ্গে হলেন, কেন আবার বিয়ে করলেন? এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন সাবিকুন নাহার।
বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন, দুনিয়াটা ক্ষনস্থায়ী। পুরোদস্তুর ধোঁকা, নিখাঁদ এক প্রতারণা। কতদিনই আর বাঁচব আমরা এই দুনিয়ায়? অনন্ত পরকালের চুলছেড়া হিসেব আর চিরস্থায়ী জান্নাতের সাফল্যই যে সব! সেই সাফল্যের ভিখারী হয়েই আজ কথাগুলো লিখছি। কে কি ভাববে? কে কি বলবে?
বাচ্চারা বাবা মাকে খোঁজে এমনটা জানিয়ে সাবিকুন নাহার লিখলেন, কি হবে আর কি নাহবে এসবেরও বিন্দুমাত্র পরোয়া নেই।
প্রতিনিয়ত আয়িশা তার বাবাকে খোঁজে! বাবা যাবো! বাবা গাড়ি! বাবা কই? শব্দগুলোর ওজন উঠানোর কোনো পরিমাপক মহাবিশ্বে নেই। উসমানও মাকে পাচ্ছেনা। উসমানের সামনে অন্যরা তাদের মায়ের নিকট আম্মু বলে ছুটে যাচ্ছে। অন্যদিকে নির্লিপ্ত চাহনিতে উসমানের প্রশ্ন তার আম্মুর কাছে কখন নিয়ে যাবে!
বিচ্ছেদ ও পূর্বের ঘটনা প্রসঙ্গে সাবিকুন নাহার বলেন, যা ঘটে গেছে তার অনিবার্য পরিণতি যে এটাই তা হয়তো আমরা জানতাম, তবে জানা আর প্রতিনিয়ত উপলব্ধি করা যে কখনোই এক নয়! ইলমুল ইয়াক্বিন আর হাক্কুল ইয়াক্বিনে আছে আকাশসম ফারাক।
জানা বিষয়টি উপলব্ধি করেছি আমরা। বেশাক আমাদের ভুল ছিলো। কিছু ভুল বুঝেছি, বুঝানোও হয়েছে! উসমানের বাবার প্রতি প্রগাঢ় মুহাব্বাত থেকেই অস্থির হয়েছি, কিছু রাগ, জেদ ও সীমালঙ্ঘনও হয়ে গেছে! সাথে মানুষ ও জ্বীন শয়তান, বিচ্ছেদের যাদু কি না ছিল?
সাবিকুন নাহার বলেন, হয়তো এভাবেই আমাদের ভাগ্য লিখা হয়েছিলো। তাকদিরের কাছে তো অনেক বড়রাও অসহায় ছিলেন, যেমন গ্রহণের সময় নিরুপায় থাকে চাঁদের আলো। তাই বলে কি চাঁদ কস্মিনকালেও কলংকিত? সে যে আজন্ম আমার চাঁদ-ই ছিলো! দুরাচার শয়তান সঠিক সময়ে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে বারংবার! শুভ্র, সচ্ছ, সুন্দরে, চিন্তায় ইবলিসকে তাই ঠাঁই দেইনি আর।
ফা লিল্লাহিল হামদ! অতঃপর... আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন। আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন। আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামীন। উসমান ও আয়িশা তাদের বাবা মাকে ফিরে পেয়েছে! আল্লাহুম্মা লাকাল হামদ।
স্বামীকে কষ্ট দিয়েছেন জানিয়ে সাবিকুন নাহার বলেন, আমি আমার মোহাব্বত, আমার আত্মা, সংসার আর চাদরটাকে ফিরে পেয়েছি! সকলের সামনে বরাবরই বলে গিয়েছি আমার হৃদয়ের স্পন্দন তুমি। "তোমাকেই ভালোবাসি" Taw Haa Zin Nurain জানি তোমাকে প্রচণ্ড কষ্ট দিয়ে ফেলেছি! ভুল বুঝেছি! তুমি গায়রতে সম্মানে প্রচন্ড আঘাত পেয়েছো! যা উদ্দেশ্য ছিলোনা তা হয়ে গেছে! যা বোঝাতে চাইনি তাই প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে! অজস্র আঘাত আর ক্ষত নিয়ে মুখ বুজে নীরবেই চলে গেছ! প্রতিউত্তর টুকুও করোনি! তোমার অনন্য সবরের প্রতিদানে আরশের রব তোমার দো-জাহানের সমস্ত হাজত মাকসাদ পূরণ করে দিন।আজ আমি তোমাকে ফিরে পেয়ে কত খুশি তা বলার আমার কোনো ভাষা নেই!
সবশেষে সাবিকুন নাহার বলেন, শুধু এটুকুই দু'আ যে, এতকিছুর পরেও আমাকে তুমি যেভাবে খুশি করেছো আল-ওয়াদুদ শতগুণ উত্তমরূপে তোমাকে তার দিদার দিয়ে রোজ হাশরে খুশি করে দিন! তোমার রিসেন্ট লেকচারটা শুনেছি। হ্যাঁ, আমি তোমার জন্য যায়েদ (রাঃ) হতে পারিনি। তবে আমি জীবন দিয়ে রবের সন্তুষ্টির তরে, দ্বীনের পথে তোমার জন্য নিজেকে প্রমাণ করবই ইনশাআল্লাহ! আর কিছুই বলার নেই। আল্লাহ চান তো অচিরেই প্রতিটি অযাচিত বিষয় পুরো দুনিয়ার সামনে দীপ্তমান হবে ইনশাআল্লাহ!
এসএন