বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্তে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে পুলিশের পাঁচজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নাম এসেছে। প্রতিবেদনে ১৪৬ নম্বর পয়েন্টে তাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এদের মধ্যে তৎকালীন আইজিপি নূর মোহাম্মদ, তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার নাইম আহমেদ, সাবেক (পলাতক) অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম, বিডিআর হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত ডিআইজি আব্দুল কাহার আকন্দ এবং তার অধীনস্থ তদন্ত দল রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা হচ্ছে—
তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার নাইম আহমেদ
তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার নাইম আহমেদকে কমিশন নিম্নবর্ণিত দোষে দোষী সাব্যস্ত করছে
১. ক্রাইম সিন কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ না করা এবং ২. অপরাধীদের পলায়ন প্রতিরোধ না করা।
অতিরিক্ত ডিআইজি আব্দুল কাহার আকন্দ ও তার অধীন তদন্ত দল
আকন্দ ও তার দলকে কমিশন নিম্নবর্ণিত দোষে দোষী সাব্যস্ত করছে।
১. নারী ও শিশুদের শারীরিক, মানসিক নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় মামলা না করা এবং সাক্ষী থাকা সত্ত্বেও অভিযোগপত্র দাখিল করা না করা
২. সাক্ষী পাওয়া সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট আওয়ামী লীগ ব্যক্তিবর্গের নাম অভিযোগপত্রে যুক্ত না করা
৩. মোবাইল ফোন সিডিআর সংগ্রহ করে প্রযুক্তিগত সাক্ষ্য-প্রমাণ অভিযোগপত্রে উপস্থাপন না করা
৪. সেনা অফিসারগণকে খুন, ঘটনার আলমত ধ্বংস এবং পলাচনের সুযোগ দানকারীদের বিষয় তদন্ত না করা
৫. সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ না করা
৬. বিরোধী দলীয় নিরীহ নেতা কর্মীদের মামলায় ফাঁসিয়ে সাজা প্রদানের ব্যবস্থা করা এবং
৭. অত্র কমিশনকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য না দিয়ে অসযোগিতা করা
অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম
জনাব মনিরুল ইসলামকে কমিশন নিম্নবর্ণিত দোষে দোষী সাব্যস্ত করছে।
১. পাঁচ সেনা অফিসারকে ফাঁসানোর জন্য ডিজিএফআই-কে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করা এবং ২. তদন্ত কাজে অসহযোগিতা।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে সীমান্তরক্ষী এই বাহিনীর তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জনকে হত্যা করা হয়।
সেই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরণ আইনের মামলায় ১৩৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। আরো অন্তত ২২৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। তবে ঘটনার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে শুরু থেকেই নানা প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন ভুক্তভোগীরা।
ঘটনার দেড় দশক এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর সাত সদস্যের জাতীয় স্বাধীন কমিশন গঠন করে সরকার।
তদন্ত কমিশন গত ৩০ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
এবি/টিকে