বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, গারোসহ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক উন্নয়ন এবং তাদের স্বীকৃতি, নিরাপত্তা, মর্যাদা এবং ভাষা, শিক্ষা ও সংস্কৃতির অধিকার রক্ষা একটি সভ্য রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্র বারবার হোঁচট খেয়েছে। বিএনপি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সভ্য রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনে পদক্ষেপ নেবে।
তিনি গারোসহ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জনগণদের বিএনপির প্রতি আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগের মতো বিএনপি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে দলীয় রাজনীতির দাবার গুঁটি নয়, দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে।
শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকালে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্তের গারো পাহাড় সংলগ্ন চার্চ অব বাংলাদেশে গারো স্টুডেন্ট ইউনিয়নের হালুয়াঘাট উপজেলা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, গারো ছাত্রদের ন্যায়সংগত দাবি এবং সমস্যা সমাধানে তিনি পদক্ষেপ নেবেন।
তিনি বলেন, দেশের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, নিরাপত্তা এবং সম্মানের প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সরকার ভয়াবহ ব্যর্থ হয়েছিল। তারা ক্ষমতায় থাকলেও গারো ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা রক্ষায় তাদের কোনো বাস্তব পদক্ষেপ নেই উল্টো বৈষম্য, দখলদারি ও অবহেলাই বেড়েছে।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, গারো জনগোষ্ঠীর প্রতি বিএনপি সব সময়ই আন্তরিক। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গারো ছাত্রদের উন্নত শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধির জন্য ময়মনসিংহে পৃথক ছাত্র হোস্টেল নির্মাণ করে দিয়েছিলেন। গারো যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য সীমান্তরক্ষী বাহিনীসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির ব্যবস্থা করেছিলেন। তার পদক্ষেপেই গারো জনগোষ্ঠীর বহু পরিবার স্বাবলম্বী হতে শুরু করে।
অথচ আওয়ামী লীগ তার সেই উন্নয়ন ধারাকে বন্ধ করে দিয়ে বৈষম্যের দেয়াল আরো উঁচু করেছে।
প্রিন্স বলেন, গারো জনগোষ্ঠী শুধু এ দেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের অংশ নয় তারা এ অঞ্চলের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও উৎপাদন ব্যবস্থার অপরিহার্য শক্তি। অথচ উন্নয়ন, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে তারা এখনো নানামুখী বৈষম্যের মুখোমুখি। বিএনপি ক্ষমতায় এলে নৃ-গোষ্ঠীর নাগরিকদের নিরাপত্তা, ভূমির অধিকার, মাতৃভাষায় শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষায় একটি সুসমন্বিত জাতীয় নীতি গ্রহণ করবে।
তিনি আরো বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর উন্নয়নে পৃথক মন্ত্রণালয় থাকলেও সমতলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর উন্নয়নে সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষ না থাকায় তাদের অধিকার রক্ষা ও সমস্যা সমাধানে বঞ্চিত হচ্ছে।
একারণেই বিএনপি ক্ষমতায় এলে সমতলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর উন্নয়নে ও তাদের সমস্যা সমাধানে পৃথক সরকারী অধিদপ্তর গঠন করা হবে।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, শিক্ষা, সংগঠন ও নৈতিক পথেই জাতিগোষ্ঠীর অগ্রগতি সম্ভব। সবাইকে সুশিক্ষিত হয়ে আলোকিত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে আপনারাই আগামী দিনের শক্তি।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন রিয়াল মান্দিক প্লোটু। বক্তব্য দেন ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সুভ্রত রেমা, উপজেলা জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী দলের আহ্বায়ক সুব্রত চিরান, সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট শুভ্রা পান্থ্রা, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী ফরিদ আহমেদ পলাশ, গারো স্টুডেন্টস ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিবাল মানখিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সতীর্থ চিরান, সাবেক সভাপতি নিপুণ মানখিন, গাজিরভিটা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, হালুয়াঘাট উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নাঈমুর আরেফিন পাপন, পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক নূরে আলম জনি।
আরপি/টিকে