দেশের পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে (৩০ নভেম্বর-৪ ডিসেম্বর) সূচক ও লেনদেন দুটোই নিম্নমুখী ছিল। আলোচ্য সপ্তাহে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ২ দশমিক ৮২ শতাংশ কমেছে। পাশাপাশি এক্সচেঞ্জটির দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে প্রায় ২২ শতাংশ। গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারে সব খাতের শেয়ারেই নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। ডিএসইর সাপ্তাহিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইএক্স সূচক আগের সপ্তাহের তুলনায় ১৪১ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮৮৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৫ হাজার ২৮ পয়েন্ট। নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে ৪২ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ১ হাজার ৯৩৪ পয়েন্ট। ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গত সপ্তাহে ৩২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ১ হাজার ৫৭ পয়েন্ট।
ডিএসইতে গত সপ্তাহে মোট ৩৮৩টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪৫টির, কমেছে ৩২৫টির ও দর অপরিবর্তিত ছিল ১৩টির। আর লেনদেন হয়নি ২৯টির। গত সপ্তাহে সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে ইসলামী ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ ও পদ্মা অয়েলের শেয়ার।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে দৈনিক গড়ে ৪১১ কোটি ৪৬ লাখ ১০ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৫২৫ কোটি ১১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। সে হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে এক্সচেঞ্জটির দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ২১ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও আর্থিক খাত পুনর্গঠনের চলমান প্রক্রিয়া ঘিরে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ বাড়ায় বাজারে সতর্কতা তৈরি হয়েছে। ফলে গত সপ্তাহে বাজার নিম্নমুখী ছিল।
খাতভিত্তিক লেনদেনে গত সপ্তাহে বস্ত্র খাতের আধিপত্য ছিল। লেনদেনচিত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৪ দশমিক ৬০ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বস্ত্র খাত। ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাত। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতের দখলে ছিল লেনদেনের ১১ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত ১০ দশমিক ৪৮ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তালিকার চতুর্থ অবস্থানে ছিল। আর ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তালিকার পঞ্চম অবস্থানে ছিল জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত।
ডিএসইতে গত সপ্তাহে সব খাতের শেয়ারেই নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে সেবা ও আবাসন খাতে। এছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে ৭, জীবন বীমা খাতে ৬ দশমিক ১৪, কাগজ ও মুদ্রণ খাতে ৫ দশমিক ৭০ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন ছিল।
দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই গত সপ্তাহে ২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ কমে ১৩ হাজার ৭৪৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৪ হাজার ৩৭ পয়েন্ট। সিএসসিএক্স সূচকটি সপ্তাহের ব্যবধানে ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমে ৮ হাজার ৪৭৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৮ হাজার ৬৪২ পয়েন্ট।
সিএসইতে গত সপ্তাহে ৫৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১১০ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আলোচ্য সপ্তাহে সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৮৬টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬৯টির, কমেছে ২০০টির আর দর অপরিবর্তিত ছিল ১৭টির।
কেএন/এসএন