সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলার ঘটনায় ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড

রাজধানী ঢাকার পল্টনে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সমাবেশে বোমা হামলার ঘটনার মামলায় ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া দুজনকে খালাস দেয়া হয়েছে।

সোমবার সকালে ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রবিউল আলম এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি আসামিদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মুফতি মাঈনুদ্দিন শেখ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, আরিফ হাসান সুমন, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মহিবুল মুস্তাকিম, আনিসুল মুরসালিন, মুফতি আবদুল হাই, মুফতি শফিকুর রহমান ও নুরুল ইসলাম। তাদের মধ্যে মাঈনুদ্দিন, আরিফ, সাব্বির ও শওকত ছাড়া বাকিরা পলাতক।

আর খালাস পাওয়া দুজন হলেন- মশিউর রহমান ও রফিকুল ইসলাম মেরাজ। তারা দুজনেই পলাতক।

২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি চালানো বোমা হামলায় মোট পাঁচজন নিহত ও অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন। ঘটনার ঠিক ১৯ বছর পর মামলার রায় দিলেন আদালত।

বিচারক তার ১০৪ পৃষ্ঠার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, এই জঙ্গিরা সিপিবিকে কাফের মনে করত। তাদের নস্যাৎ করার জন্য তারা ওই হামলা চালায়।

আদালত সূত্র জানায়, সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলার অন্যতম আসামি জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় তাকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে সিপিবির লাল পতাকা সমাবেশে এই বোমা হামলা হয়েছিল। তাতে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার সিপিবি নেতা হিমাংশু মণ্ডল, রূপসা উপজেলার সিপিবি নেতা ও দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরির শ্রমিক নেতা আব্দুল মজিদ, ঢাকার ডেমরার লতিফ বাওয়ানি জুটমিলের শ্রমিক নেতা আবুল হাসেম ও মাদারীপুরের কর্মী মোক্তার হোসেন ঘটনাস্থলেই মারা যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ দিন পর মারা যান খুলনা বিএল কলেজের ছাত্র ইউনিয়ন নেতা বিপ্রদাস রায়। হামলায় আহত হয় শতাধিক।

বোমা হামলার ঘটনায় সিপিবির তৎকালীন সভাপতি মনজুরুল আহসান খান বাদী হয়ে মামলা করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ২৭ নভেম্বর ১৩ জনকে আসামি করে মামলার অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। ২০১৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সালাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১০৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৮ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। তবে আসামিপক্ষে কেউ সাফাই সাক্ষ্য দেননি।

গত বছরের ১ ডিসেম্বর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে এ মামলার রায়ের জন্য ২০ জানুয়ারি দিন ঠিক করে দেন বিচারক।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: