ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধীর মধ্যে বুধবার ৮৮ মিনিটের বৈঠকটি সংসদের করিডোরে তীব্র জল্পনা তৈরি করেছে। শীতকালীন অধিবেশন চলার সময় এই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল মুখ্য তথ্য কমিশনার পদে নিয়োগের প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা করার জন্য। তবে বৈঠকের সময়সীমা এত দীর্ঘ হবে বলে কেউই আশা করেননি। আর সে কারণেই এনিয়ে সবার আগ্রহ চরমে পৌঁছায়।
নিয়ম অনুসারে, তথ্য কমিশন, নির্বাচন কমিশন এবং ভিজিল্যান্স বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ পদে নিয়োগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী, তাঁর মনোনীত একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।
এবার প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলনেতার সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ। সূত্র জানায়, রাহুল গান্ধী দুপুর ১টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছান এবং বৈঠক শুরু হয় ১টা বেজে ৭ মিনিটে। ঘড়ির কাঁটা যত এগিয়েছে, ততই সংসদ সদস্যদের মধ্যে জল্পনা শুরু হয়, এত দীর্ঘ বৈঠকে কি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
৮৮ মিনিট পর রাহুল ৱবেরিয়ে আসার পর জানা যায়, আলোচনা শুধু মুখ্য তথ্য কমিশনারের নিয়োগ নিয়েই ছিল না, বরং আটজন তথ্য কমিশনার এবং এক ভিজিল্যান্স কমিশনারের নিয়োগ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সূত্রমতে, রাহুল গান্ধী সব নিয়োগের বিষয়ে তাঁর আপত্তি জানিয়েছেন এবং লিখিতভাবে তা জমা দিয়েছেন।
এই ধরনের বৈঠকে বিরোধী দলনেতাদের পক্ষ থেকে আপত্তি আসা স্বাভাবিক। সূত্র জানিয়েছে, এর আগে মল্লিকার্জুন খাড়গে বা রাহুল গান্ধী বিরোধী দলের প্রতিনিধি হিসেবে যে বৈঠকগুলোতে অংশ নিয়েছেন, তাঁরা আপত্তি তুলেছেন। যদিও এবারও ফলাফলে কোনো ভিন্নতা আসেনি, তবুও সংসদ করিডোরে ৮৮ মিনিটের বৈঠক নিয়ে আলোচনা ছিল তীব্র।
বর্তমানে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনে মুখ্য তথ্য কমিশনারের পদসহ আটটি শূন্যপদ রয়েছে। এই কমিশনাররাই আবেদনকারীদের অভিযোগ এবং আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন এবং তথ্য প্রকাশে কাজ করেন।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর হীরালাল সামারিয়ার অবসর নেয়ার পর থেকে মুখ্য তথ্য কমিশনারের পদটি শূন্য রয়েছে। বর্তমানে মাত্র দুজন তথ্য কমিশনার- আনন্দী রামালিঙ্গম ও বিনোদ কুমার তিওয়ারি এই কাজ সামলাচ্ছেন। কমিশনের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, বর্তমানে ৩০,৮৩৮টি মামলার নিষ্পত্তি অপেক্ষায় আছে।
তথ্য জানার অধিকার আইন অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী হলেন এই নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান। এই কমিটিতে আরও থাকেন বিরোধী দলনেতা এবং প্রধানমন্ত্রী মনোনীত একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এই কমিটিই মুখ্য তথ্য কমিশনার এবং অন্যান্য তথ্য কমিশনারদের নিয়োগের জন্য নাম নির্বাচন ও সুপারিশ করে থাকে।
কেএন/টিকে