যশোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সংগঠক শোয়াইব হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে যশোর শহরের ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার শোয়াইব সদর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে। তিনি একটি মামলায় দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন।
ডিবির ওসি মঞ্জুরুল হক ভূঞা জানান, ২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে একটি মারামারি মামলায় শোয়াইবের বিরুদ্ধে দুই বছরের কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে দুই মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন যশোরের একটি আদালত। এই মামলায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন আদালত। ওই পরোয়ানায় তাকে গ্রেপ্তার করে কোতয়ালি থানা পুলিশ। পরে কোতয়ালি পুলিশ তাকে ডিবি অফিসে নিয়ে যায়।
মামলায় শুধু তিনিই নন, তার বাবা সিরাজুল ইসলাম এবং ভাই জুবায়ের হোসেনসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। মামলাটি করেছিলেন কুতুবপুর হাফেজিয়া মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য একই গ্রামের শামসুর রহমান।
অভিযোগে বলা হয়, মাদরাসা কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে নয়টার দিকে ফোন করে শামসুর রহমানকে বাইরে যেতে বলা হয়। রাত ১০টার দিকে তিনি সেখানে গেলে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা দিয়ে তাকে মারধর করা হয়। তার পরিবার এগিয়ে এলে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়।
স্থানীয়রা সে সময় তাকে যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি চিকিৎসা নিয়ে ওই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি থানায় মামলা করেছিলেন। এই মামলায় শুধুমাত্র শোয়াইব হোসেনের জেল-জরিমানা হয়। অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লস্কর সোহেল রানা গত ২৫ অক্টোবর ওই সাজা প্রদান করেছিলেন। বাকি আসামিরা খালাস পান।
জুলাই আন্দোলনে যশোরের পরিচিত মুখ ছিলেন শোয়াইব হোসেন। জেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে প্রতিটি কার্যক্রমে ছিলেন সক্রিয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির বিভিন্ন কার্যক্রমে তাকে দেখা গেলেও জেলা কমিটির কোনো পদে তিনি ছিলেন না। তবে জাতীয় নাগরিক কমিটির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। গত ২৭ জুলাই একটি ফেসবুক পোস্টে সব কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ান শোয়াইব।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘২০১৮-তে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনীতির যাত্রা, ২০২৪-এ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারেও কোটা প্রথা বহালের প্রতিবাদে শুরু হওয়া আন্দোলনের শুরু থেকে ১ দফা, পরবর্তীতে ফ্যাসিস্টের পতনের মাধ্যমে বিপ্লবের অংশ হতে পেরে গর্বিত।’
পোস্টে তিনি আরও বলেন, ‘আমি বৈষম্য বা অন্য কোনো কমিটিতে ছিলাম না, তবে জাতীয় নাগরিক কমিটি নামক অরাজনৈতিক প্লাটফর্মে ছিলাম। ছিলাম শুধুই রাজপথের কর্মী হয়ে। আপাতত সরে দাঁড়াচ্ছি! রাষ্ট্রের প্রয়োজনে আবারও দেখা হবে রাজপথে ইনশাআল্লাহ।’
টিজে/টিকে