আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে টিএফআই-জেআইসি সেলে গুম-নির্যাতন ও চব্বিশের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিন মামলায় গ্রেপ্তার ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে বাংলাদেশ জেল-প্রিজন ভ্যান লেখা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সবুজ রঙের গাড়িতে করে তাদের আনা হয়। এরই মধ্যে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
জেআইসি সেলে গুম-নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। এ মামলায় ১৩ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ দেবেন ট্রাইব্যুনাল-১। গত ৯ ডিসেম্বর এ দিন নির্ধারণ করা হয়।
এ মামলায় গ্রেপ্তার তিন সেনা কর্মকর্তা হলেন- ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বাকিরা পলাতক রয়েছেন।
এছাড়া র্যাবের টিএফআই সেলে গুম-নির্যাতনের মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর আজ শুনানি করবেন স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। গত ৩ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। শুনানিতে গুমের ভয়াবহ বর্ণনা তুলে ধরে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আবেদন করেন তিনি।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে সাব-জেলে রয়েছেন ১০ সেনা কর্মকর্তা। তারা হলেন- গ্রেপ্তার ১০ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। তারা হলেন- র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।
অপরদিকে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর রামপুরায় ২৮ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেক মামলায় বিজিবি কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। গত ৬ ডিসেম্বর ফরমাল চার্জের বিষয়ে শুনানি শেষ করেন চিফ প্রসিকিউটর। আসামিপক্ষ ও স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীদের শুনানি হবে আজ। রেদোয়ানুল ছাড়া অপরজন হলেন বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত বিন আলম।
এদিকে, সেনা কর্মকর্তাদের আনা উপলক্ষ্যে বরাবরের মতোই হাইকোর্টের মূল ফটকে কঠোর নিরাপত্তায় রয়েছে পুলিশ-সেনাবাহিনী। ট্রাইব্যুনাল ফটকের দুই পাশেও বিজিবি-র্যাব ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তৎপর দেখা গেছে এপিবিএনসহ সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদেরও।
কেএন/টিকে